এইদিন ওয়েবডেস্ক,শ্রীনগর,১২ আগস্ট : সাড়ে তিন দশক আগে কাশ্মীরি পণ্ডিত মহিলা সরলা ভাট (Sarla Bhatt) হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ জম্মু ও কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ) এর সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির মধ্য কাশ্মীরের বাড়িতে অভিযান চালালো রাজ্য তদন্ত সংস্থা । জেকেএলএফ -এর প্রাক্তন নেতা পীর নূরুল হক শাহ ওরফে এয়ার মার্শাল নামে এক সন্ত্রাসবাদীও সেক নৃশংস বর্বরোচিত গনধর্ষণ-হত্যায় যুক্ত ছিল । আজ মঙ্গলবার তার বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয় । সংস্থাটি সম্প্রতি মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযান সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রয়েছে।
বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য টুইট করেছেন,’শ্রীনগরের শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের একজন তরুণী কাশ্মীরি পণ্ডিত নার্স সরলা ভাটকে ১৯৯০ সালের এপ্রিলে কাশ্মীরে জঙ্গিবাদের তুঙ্গে থাকাকালীন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সশস্ত্র জঙ্গিরা তাকে তার কর্মক্ষেত্র থেকে অপহরণ করে, একটি অজানা স্থানে নিয়ে যায় এবং তার উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালায়। তাকে গণধর্ষণ করা হয়, বিকৃত করা হয় এবং হত্যা করা হয় – তার দেহ টুকরো টুকরো করে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফেলে দেওয়া হয়। তার হত্যা কেবল একটি জঘন্য অপরাধ ছিল না বরং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযানের অংশ ছিল, যার লক্ষ্য ছিল উপত্যকা থেকে হিন্দু সংখ্যালঘুদের তাড়িয়ে দেওয়া। সরলা ভাটের হত্যা ১৯৯০ সালে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের গণহত্যার কারণ হয়ে ওঠা নৃশংসতার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্মারকগুলির মধ্যে একটি।’
জম্মু-কাশ্মীরের সৌরার শের-ই-কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের নার্স ছিলেন কাশ্মীরি পণ্ডিত তরুনী সরলা ভাট। হোস্টেল থাকতেন তিনি । ১৯৯০ সালের ১৪ এপ্রিল জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের সহযোগীদের একটি দল ইনস্টিটিউটের হোস্টেল থেকে অপহরণ করে । সরলা ভাটকে কয়েকদিন ধরে গণধর্ষণ করা হয় । তারপর জীবিত অবস্থার করাত কলের করাত দিয়ে দু’পায়ের মাঝ বরাবর চিড়ে দেয় সন্ত্রাসীরা । পরে ১৯ এপ্রিল দেহাংশগুলি শ্রীনগরের কেন্দ্রস্থল থেকে উদ্ধার হয় । ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে হত্যার আগে তাকে গণধর্ষণ ও নির্মমভাবে কষ্ট দিয়ে মারা হয়েছিল।
সেই সময় জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ন্যাশানাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাহ । এত নৃশংসতার পরেও তৎকালীন সরকার চোখ বেঁধে বসেছিল । এপ্রিলে পণ্ডিত নার্স সরলা ভাটকে গণধর্ষণ হত্যার পর জুনে আর এক কাশ্মীরি তরুনী গিরিজা টিকুকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয় । এরপর আতঙ্কে ১৯৯০ সালের জুনের মধ্যে কাশ্মীর থেকে পালিয়ে যায় ৯০% এর অধিক কাশ্মীরি পণ্ডিত । যখন হিন্দুরা তাদের জীবনের ভয়ে কাশ্মীর থেকে দেশান্তরিত হতে শুরু করেছিল। যদিও তারা আশা করেছিল যে অনুকূল পরিস্থিতি এবং সহিংসতার অবসান ঘটবে এবং একদিন পালিয়ে গিয়ে তাদের পূর্বপুরুষের বাড়িতে ফিরে যাবে, কিন্তু তা কখনও ঘটেনি। দশকের পর দশক ধরে সরকার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু তাদের জন্য পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি, না রাজনৈতিক দলগুলি তাদের সম্পত্তি ফিরে পেতে এবং তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পক্ষে কখনও সমর্থন করেনি।।