এইদিন ওয়েবডেস্ক,উদয়পুর(রাজস্থান),১৮ আগস্ট : উদয়পুরে ছুরি হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে উদয়পুর শহরের খাঞ্জীপীরের দেওয়ানশাহ কলোনিতে নির্মিত অভিযুক্তদের অবৈধ বাড়ির ওপর প্রশাসন বুলডোজার চালিয়েছে । অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় । এদিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত ওই ছাত্রকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন।
রিপোর্ট অনুসারে, বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলার আগে পৌর কর্পোরেশনের আধিকারিকরা বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর পর বাড়িটি খালি করা হয়। বাড়ির ভেতরে কেউ নেই তা নিশ্চিত হলে দুটি জেসিবি দিয়ে ঘর ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আধিকারিকদের দাবি, বাড়ির যে অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে তা বেআইনিভাবে নির্মান করা হয়েছিল৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৭ আগস্ট শনিবার সকালে পৌর কর্পোরেশন ও বন বিভাগ বাড়িটিতে অবৈধ নির্মাণ সংক্রান্ত নোটিশ সাঁটিয়ে দেয়। এতে পরিবারকে বাড়ি খালি করতে ৩ দিন সময় দেওয়া হয়। তবে শনিবারই বাড়িটি খালি করে ভেঙে ফেলা হয়। মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের দল যে বাড়িটি ভেঙে দিয়েছে তা অভিযুক্ত ছাত্রের বাবার নয় বলেও জানা গেছে। এ বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি।
আজ তকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় সংঘর্ষের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছুরির আঘাতে আহত ওই ছাত্রের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যে হাসপাতালে শিক্ষার্থীর চিকিৎসা চলছে সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উদয়পুরের কালেক্টর অরবিন্দ কুমার পোসওয়াল সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সাথে কথা বলার সময় বলেছেন,’আমাদের অগ্রাধিকার হল শিশুটির যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া । শিশুটির অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমি সবাইকে গুজব না ছড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি। অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তারা কোথা থেকে অবৈধ অস্ত্র পেয়েছে তা খুঁজে বের করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ।’
প্রসঙ্গত,ঘটনাটি ঘটেছে উদয়পুরের ভাটিয়ানী চৌহাট্টা সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। দুপুরের খাবারের বিরতির পর দশম শ্রেণির পড়ুয়া দুই ছাত্রের মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। দুজনের বয়স ১৫ বছর বলা হয়েছে। বিষয়টি এতটাই বেড়ে যায় যে এক ছাত্র অপর ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে। হামলার পর নাবালক অভিযুক্ত পালিয়ে যায় । আহত ছাত্রকে মহারানা ভূপাল (এমবি) হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ওই ছাত্রের চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, দুই শিক্ষার্থী দুই ভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের। হিন্দু সংগঠন বিষয়টি জানতে পেরে হাসপাতালের বাইরে জড়ো হয়ে স্লোগান দেয় । বিক্ষুব্ধ জনতা শহরের অনেক যানবাহন ভাংচুর করে এবং অনেক গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয়। সংগঠনের লোকজন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
উদয়পুরের কালেক্টর অরবিন্দ পোসওয়াল, অতিরিক্ত এসপি উমেশ ওঝা, বিভাগীয় কমিশনার রাজেন্দ্র ভাট সহ অনেক আধিকারিক বিষয়টি শান্ত করার চেষ্টা করেন। ওই এলাকায় ভারতীয় সিভিল ডিফেন্স কোডের ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। ১৬ আগস্ট রাত ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।।