এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগণা,০৫ অক্টোবর : আরজি কর কান্ডের পর রাজ্য সরকার ও পুলিশের উপর যেন কিছুতেই ভরসা রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষ । তরুনী চিকিৎসক ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অকুস্থলের প্রমান নষ্ট,দায়সারা করে ময়নাতদন্ত এবং মৃতদেহের সৎকারে অস্বাভাবিক তাড়াহুড়ো করায় অভিযোগে সমান অভযুক্ত ছিল শাসকদল ও কলকাতা পুলিশ । দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার জয়নগরের মহিষমারি থানা এলাকার কৃপাখালির মাত্র ৯ বছরের এক শিশুকন্যার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ধৃত নরপশু মোস্তাকিন সরদার (১৯)-এর বিরুদ্ধে খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট, অপহরণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হলেও পর্যন্ত ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বারুইপুর আদালতের আইনজীবী সামিউল হক । যেকারণে ফের পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে ।
তার প্রতিফলনও দেখতে পাওয়া গেল আজ দুপুরে পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে । স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল হাসপাতালে গেলে তাকে দেখে শুধু ‘গো ব্যাক’ স্লোগানই দেওয়া হয়নি,মহিলারা জুতোও দেখান । তবে সবচেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডলকে । তৃণমূল বিধায়ক প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লে তিনি জনতাকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ । এরপর জনতা তাকে ধরে রীতিমতো পিটিয়ে দেয় বলে জানা গেছে ।
তবে শুধু শাসকদলের সাংসদ-বিধায়করাই নয়, রীতিমতো হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে রাজ্য পুলিশকেও । মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়ির এক আধিকারিককে রীতিমতো ঝাঁটাপেটা করেন মহিলারা । পাশাপাশি মহিলারা বারুইপুরের এসডিপিও-কে লাঠি হাতে ধাওয়া করেন । দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোকারীরা । তবে সবচেয়ে করুন অবস্থা ছিল সিপিএমের । সিপিএমের নেত্রী কণীনিকা ঘোষ বোস ও মীনাক্ষী মুখার্জি বিক্ষোভকারীদের হয়ে গলা ফাটালেও উলটে তাদেরই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় । কেবল গ্রামবাসীদের সামনে থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা গেছে বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে । বিক্ষোভ প্রদর্শনের বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন,’বাংলায় আবারও এক নারকীয় ঘটনা!জয়নগরের মহিষমারিতে মাত্র ৯ বছরের বালিকাকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও খুন করা হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে কোনো তৎপরতা দেখায় না।আজ আমি কুলতলী হাসপাতালের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে আছি, জয়নগরের সেই তরুণীর বিচারের দাবিতে যাকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশকে অবশ্যই সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে ময়নাতদন্ত করতে হবে এবং মৃতদেহটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা আরজি কর হাসপাতালের মতো আরেকটি ঘটনা ঘটতে দেবো না।আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’ তিনি জাস্টিস ফর উইমেন,জাস্টির ফর ভিক্টিম এবং উই ওয়ান্ট জাস্টিস রাইট নাউ প্রভৃতি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছেন ।
এদিকে ধৃত নরপশু মোস্তাকিন সরদাকে আজ বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হলে পক্ষে কোনও আইনজীবী সওয়াল করেননি । পুলিশের তরফে সাত দিনের হেফাজত চাওয়া হলে আদালত মঞ্জুর করেছে।।