প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ আগষ্ট : সিবিআই বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডলের রাইসমিলে হানা দিতেই সন্ধান পেল চারটি বিলাস বহুল গাড়ির ।আর তানিয়ে শুক্রবার তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা তথা লোকসভার সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,’তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে রাইস মিলে চাল উৎপাদনের বদলে গাড়ি উৎপাদন হচ্ছে। এটা বাংলার লজ্জা ।’
দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে শুক্রবার বর্ধমান সদর জেলা বিজেপি কার্যালয়ে উপস্থিত হন লকেট চট্টোপাধ্যায় ও বিজেপি নেতা জিতেন্দ্রনাথ তিওয়ারি । বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,’এই রাজ্যে ফ্ল্যাটে কোটি কোটি টাকা মেলে,রাইসমিলের ভিতরে গাড়ি উদ্ধার হয়। তাই বাংলার মানুষ হিসেবে নিজেদের লজ্জা হয় । রাইস মিলের ভেতরে গাড়ির শোরুম বানিয়ে ফেলেছে।এই গাড়ি গুলোকে বাইরে দেখানো হতো না শোরুম বানিয়ে ভেতরে রেখে দেওয়া হয়েছিল। আমি নিশ্চিত এই গাড়িগুলো করেই সমস্ত রকমের দুই নম্বরি কাজ হতো। তাই এই গাড়িগুলো বাইরে রাখা হয়নি। ভেতরে রাখা হয়েছে। যাতে অনুব্রত মণ্ডলের গাড়ি বলে কেউ নিশ্চিত হতে না পারে।ওই সব গাড়ি করেই বিভিন্ন জায়গায় নানা জিনিস পাচার করা হত,অপকর্ম করা হত ।’ এখন তার প্রমাণ মিলছে বলে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা দাবি করেন । তিনি বলেন,’তৃণমূলের আমলে চোর ডাকাতদের পক্ষে সবকিছুই সম্ভব। মানুষ যেখানে খেতে পারছে না, সেখানে ওরা রাইস মিলের মধ্যে গাড়ির শোরুম বানিয়ে রেখে দিচ্ছে।এইসব ফাঁসের জন্য সিবিআই,ইডিকে ধন্যবাদ। আর কি কি ধনসম্পত্তি আছে খুব তাড়াতাড়ি যেন বার করা হয় ।’সেই দাবি সিবিআই ও ইডির উদ্দেশ্যে রাখেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ।
আমুলের বিজ্ঞাপনে “কেষ্টা বেটাই চোর“ লেখা থাকা প্রসঙ্গ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন,‘মানুষ এটাকে নিয়ে মজা লুটছে ।বাংলা কোথায় নেমে গেছে সেটা সবাই দেখুক । এইসব দেখে একজন বাঙালি হিসেবে নিজের খুব খারাপ লাগছে ।’ অন্যদিকে তিনিসহ বিজেপি নেতাদের সম্পত্তি বৃদ্ধির অভিযোগ ওঠা নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন,’প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধমূলক রাজনীতি এটা । প্রমাণ করে দেখাক । আসলে মানুষের মাথাটাকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই এই মামলা করা হয়েছে । তবে ওদের পুকুর চুরি,কয়লা চুরি ,গরু চুরি, নদির চুরিতে আমাদের কোন নেতা নেত্রীরা ধারে-কাছেও যেতে পারবে না।ওরা নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করেছে । আমরা তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত রয়েছি।’
একই ভাবে লকেটের সুরেই সুর মিলিয়ে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্রনাথ তেওয়ারি বলেন,’আমি এটাকে স্বাগত জানাচ্ছি । কারণ সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক নেতারা দুর্নীতিগ্রস্থ।তাই আমরা চাই তদন্তের সামনে দাঁড়াতে। কিন্তু যাঁরা এই অভিযোগ করছে তারা দুর্নীতিতে ঢাকা পড়ে গেছে।’
বিজেপি নেতা নেত্রীদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র দেবু টুডু বলেন,’কথায় আছে চোরের মায়ের বড় গলা । এটা যে নিছক কথার কথা নয় সেটা এদিন এই দুই বিজেপি নেতা ও নেত্রীর কথাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে । সবেতো আদালতে মামলা হয়েছে । আশা করা যায় খুব শিগগিরই প্রমাণ হয়ে যাবে বিজেপি ,সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা কতটা ধোয়া তুলসি পাতা । তখন ওদের দুর্নীতির মুখোশ খুলে যাবে ।’।