এইদিন ওয়েবডেস্ক,ময়মনসিংহ,১৩ নভেম্বর : বাংলাদেশের ময়মনসিংহে মহিলা নৃত্যশিল্পীকে থানার ঠিক পাশেই বেঁধে রেখে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে । নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে ওই শিল্পি বাধা দিলে মাথার চুল কেটে মুখে কালি লাগিয়ে দেয় হামলাকারীরা ৷ ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার(১২ নভেম্বর) ময়মনসিংহ শহরের বড়কালীবাড়ি এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কোতোয়ালী মডেল থানার একেবারে পাশেই । আক্রান্ত নৃত্যশিল্পীর নাম রূপা আক্তার । অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।
রূপা আক্তার একজন সুপ্রতিষ্ঠিত নৃত্যশিল্পী এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার যথেষ্ট খ্যাতি আছে । জানা গেছে,তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী কালাম মিয়া ও তার সহযোগীদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। গত বছর ১ অক্টোবর ২০২৪ সালে রূপা আক্তার ওই কালাম মিয়া ও আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ময়মনসিংহের ১ নম্বর সি আর আমলী আদালতে দায়ের করা হয় । পরে মামলাটি ১৩ অক্টোবর ২০২৪ সালে কোতোয়ালী মডেল থানাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত ।
জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই মোজাম্মেল, কিন্তু তিনি আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেননি। পরে নতুন করে দায়িত্ব পান এসআই আনিসুর রহমান আনিস। ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর দুপুরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন এবং থানায় ফিরে আসেন। তদন্তের কিছু সময় পরই কালাম মিয়া ও তার সাঙ্গপাঙ্গ মাফুজা, আতার আলী, শাহ আলম, ছাবিনা, আকলি, অভি, মাজেদা, আয়শা, মমতা, আকবর, মাহমুদা, সেলিম, সৌরভ ও হৃদয় ওরফে রুহুল— সবাই মিলে রূপার ওপর হামলা চালায়। তারা রূপাকে তুলে মডেল থানার একেবারে পাশেই নিয়ে গিয়ে বেঁধে ফেলে । মারধর করে । কালাম মিয়া ও তার পুরুষ সঙ্গীরা মহিলার পোশাক খুলে তাকে প্রথমে শ্লীলতাহানি করে । এরপর তারা ধর্ষণের চেষ্টা করতেই শিল্পির প্রবল বাধার মুখে পড়ে। সেই কারনে তারা রূপা আক্তারকে চুল কেটে দেয় এবং মুখে কালি মাখিয়ে দেয়।
পরে কোতোয়ালী মডেল থানার এসআই আনিসুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত রূপাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রূপা কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটির তদন্তভার এসআই মাসুদ জামালী-এর হাতে তুলে দেন।এসআই মাসুদ জামালী বলেন,’অভিযোগটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে অভিযোগ দায়েরের পর থেকে আসামিপক্ষ রূপা ও তার পরিবারকে বাড়িতে ফিরতে দিচ্ছে না বলে জানা গেছে। পরিবারটি হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। রূপার মা বলেন,’মেয়েকে নিয়ে এখন ভয়ে আছি। যারা নির্যাতন করেছে, তারা প্রতিদিন ভয় দেখাচ্ছে।’ রূপা আক্তারের পরিবার জানিয়েছে, মামলার পর থেকেই কালাম মিয়া ও তার সহযোগীরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। বুধবার তারা সমস্ত সীমা অতিক্রম করে৷ এদিকে এই ঘটনার পর ফের একবার বাংলাদেশের ভেঙা পরা আইনশৃঙ্খলা ও নারী নিরাপত্তার মারাত্মক অভাবের দিক স্পষ্ট হয়ে উঠল ।।
Author : Eidin.

