এইদিন ওয়েবডেস্ক,নোয়াখালী ও সেনবাগ,২২ মার্চ : ভারতের কর্ণাটকের ‘হিজাব বিতর্ক’ গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল । দেশের সিংহভাগ মানুষ স্কুলের মধ্যে হিজাব পড়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে হলেও বেশ কিছু রাজনৈতিক দল বিষয়টি ‘ব্যক্তি স্বাধীনতায়’ হস্তক্ষেপ বলে কার্যত হিজাব পড়ার দাবিতে অনড় কিয়দংশ পড়ুয়ার পাশে এসে দাড়িয়েছিল । যদিও শেষ পর্যন্ত পড়ুয়াদের একাংশের দায়ের করা রিট পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট । এবার এক মুসলিম বহুল রাষ্ট্রের একটি স্কুলে ক্লাসের মধ্যে বোরকা নিষিদ্ধ করল স্কুলের প্রধান শিক্ষক । আর এই নির্দেশের পরেই স্কুলের পড়ুয়া,তাদের অবিভাবকের উসকে দেওয়ার অভিযোগ উঠল জামাত- ই ইসলামির বিরুদ্ধে । তাঁরা রাস্তায় নেমে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে চাপে পড়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হন স্কুলের প্রধান শিক্ষক । ঘটনাটি বাংলাদেশের নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৭নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের শের-ই-বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হোসেন সম্প্রতি একটি নির্দেশ জারি করে জানান, ক্লাসের মধ্যে বোরকা পড়ে আসতে পারবে না ছাত্রীরা । আর এই খবর চাওড় হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ কট্টরপন্থী সংগঠন বাংলাদেশ জামাত-এ-ইসলামির (Bangladesh Jamaat-e-Islami) স্থানীয় শাখার নেতাকর্মীরা । তাঁরা হুঁশিয়ারি দেয়,৯০ শতাংশ মুসলিম দেশে ইসলামবিরোধী কোনো কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না । এরপর সংগঠনের সদস্যরা ওই স্কুলের পড়ুয়া,তাদের অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একজোট করে মুসলিম তৌহিদী জনতার ব্যানারে সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সেবারহাট বাজারে মিছিল করে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । তাঁরা সড়ক পথে মানববন্ধনও করেন । বিক্ষোভকারীরা দাবি তোলে, অবিলম্বে প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করতে হবে । নচেৎ বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় জামাত-এ-ইসলামির নেতৃত্ব ।
যদিও শের-ই-বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়নি । ৯ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- ছাত্রীরা শ্রেণীকক্ষে বোরকা খুলে ক্লাস করবে । আবার বাড়ি ফেরার পথে ফের বোরকা পরে বাড়ি ফিরবে । কিন্তু ১০ মার্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুনরায় আগের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে ।’ তাঁর অভিযোগ, ‘কারোর ইন্ধনে এই মানববন্ধন করা হয়েছে ।’
ঘটনা প্রসঙ্গে সেনবাগ থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘অনেক সময় মেয়েদের বোরকা ছেলেরা পরে ক্লাসে আসে । আবার জামাত শিবিরের কিছু কার্যক্রমে দেখা গেছে এভাবে বোরকা গায়ে দিয়ে চিঠি আদান-প্রদানও হয় । তাই এই সমস্যার কারনে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছেন,বোরকা পরে আসুক সমস্যা নেই, তবে যখন ক্লাস করবে তখন যেন মুখটা খোলা থাকে। স্কুল শেষে যাওয়ার সময় আবার বোরকা পরে যাবে । এ রকম একটা সিদ্ধান্ত প্রাথমিকভাবে দিয়েছিল ওই স্কুল । পরে সেটাও স্থগিত করেছে ।’ তিনি জানিয়েছেন,অতি উৎসাহী হয়ে জামাত শিবিরের লোকজনের ইন্ধনে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন করা হয়েছিল ।।