এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৬ মে : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় বছর পঁচিশের এক গৃহবধূর গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল বধূর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে । অগ্নিদগ্ধ বধূর নাম রেশমি বিবি । কাটোয়া থানার কৈথন গ্রামে শ্বশুরবাড়ি তাঁর । আজ শনিবার সকালে বধূকে শ্বশুরবাড়ির একটি ঘরে ঢুকিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরানোর পর ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । বধূর আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে । পরে তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । বধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে । পাশাপাশি বধূর স্বামী খেলন শেখ,শ্বশুর মনোহর শেখ ও শাশুড়িকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় । পরে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,অগ্নিদগ্ধ বধূর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে ।
জানা গেছে,পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি থানার ইছাপুরের দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা শেখ সাদেকের মেয়ে রেশমি । বছর সাতেক আগে কাটোয়া থানার কৈথন গ্রামের বাসিন্দা খেলন শেখের সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । খেলন শেখ কেরলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে । রেশমি ও খেলনের দুটি নাবালিকা কন্যা সন্তান রয়েছে । নিহত বধূর বাপের বাড়ির অভিযোগ,বিয়ের পর থেকেই রেশমির উপর নির্যাতন চালাতো তার স্বামী,শ্বশুর ও শাশুড়ি । সম্প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল । অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মাস খানেক আগে সন্তানদের নিয়ে মেমারিতে বাপের বাড়ি চলে যান রেশমি । তখন থেকেই বাপের বাড়িতেই ছিলেন তিনি ।
রেশমির বাবা শেখ সাদেক জানান,ঈদের পরের দিন কেরল থেকে কৈথন ফেরে খেলন । তারপর সে রেশমি কে আনার জন্য মেমারি যায় । সঙ্গে ছিল তার বাবা মনোহর শেখ । খেলন ও তার বাবা আর অশান্তি না করার প্রতিশ্রুতি দিলে দিন তিনেক আগে তিনি দুই নাতনিসহ মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেন । কিন্তু এদিন সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির প্রতিবেশীদের কাছে খবর পান রেশমির গায়ে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়ে । এরপর তাঁরা কাটোয়ায় ছুটে আসেন ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,এদিন সকালে রেশমি বিবির সঙ্গে তাঁর স্বামী খেলন শেখের একপ্রস্ত অশান্তি বাধে । তারই মাঝে স্ত্রীকে টেনে একটা ঘরে ঢুকিয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় খেলন । স্ত্রী যাতে বাইরে বের হতে না পারে তার জন্য সে ঘরের দরাজায় তালা লাগিয়ে দেয় । শেষে বধূর আর্ত চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে বধুকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করেন । পাশাপাশি রেশমির স্বামী,শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটকে রেখে কাটোয়া থানায় খবর দেয় প্রতিবেশীরা । বধূর শ্বশুরবাড়ির এই প্রকার নৃশংসতা দেখে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার মানুষ ।।