এইদিন ওয়েবডেস্ক, কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৫ মার্চ : পুরভোটে কাটোয়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে লড়াই করে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তথা দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরাজয় নিয়ে দলেরই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি। শনিবার অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুক লাইভ করে কাটোয়ার বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুললেন। ফেসবুকে অরিন্দমবাবুর পৌনে একঘন্টার এই ফেসবুক লাইভ রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।অস্বস্তিতে পড়েছেন দলীয় নেতৃত্ব।
কাটোয়া পুরসভার মোট ২০ টি ওয়ার্ডের মধ্যে এবারের পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ১৫ টি আসনে জয়লাভ করেছে। কংগ্রেস ৪ টিতে এবং নির্দল ১ টি আসনে জিতেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল হচ্ছে কাটোয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের। এই ওয়ার্ডে তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি,কংগ্রেস এবং দুই নির্দল প্রার্থী নিয়ে মোট ৬ জন প্রার্থী ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ১১০ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। উল্লেখ্য,কংগ্রেসের রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় হলেন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ভাইপো। অরিন্দমবাবুর অভিযোগ,তাকে হারানোর জন্যই ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নিজের ভাইপোকে প্রার্থী করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, কাটোয়ায় অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত।তবে অরিন্দমবাবু তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই দলের সঙ্গে যুক্ত। ২০১৫ সালে কংগ্রেস ছেড়ে রবীন্দ্রনাথ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তিনি একজন অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ।
অরিন্দমবাবু এদিন ফেসবুক লাইভে বলেন,” আমি প্রার্থী হওয়ার জন্য লালায়িত ছিলাম না। আমাকে প্রার্থী করার পরে আমি আমাদের নেতা রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে দেখা করে তাকে প্রণাম করে এসেছিলাম। তারপর যখন আমার বিরুদ্ধে তার ভাইপো মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন তখন আমি রবীন্দ্রনাথবাবুকে বলে এসেছিলাম ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার ভাইপোকেই দলের টিকিট দিতে।আমি সরে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার প্রস্তাব খাটেনি।আমাকে জোর করে হারানো হল।আমি কি দোষ করেছি?”
অরিন্দমবাবুর অভিযোগ,’ভোটের দিন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীরা বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট দিয়ে কংগ্রেস প্রার্থীকে জিতিয়েছে শুধু আমাকে হারানোর জন্য। পুলিশকে বলেও তখন লাভ হয়নি। পুলিশ আমাদের দলের ছেলেদের উল্টে মারধর করতে এসেছে। আমার দলেরই জামা গায়ে কংগ্রেসের হয়ে ছাপ্পাভোট করছে এটা লজ্জার। দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আমি তার প্রমান সহ অভিযোগ জানাবো।’
দীর্ঘক্ষণ ফেসবুক লাইভে রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়। তার এই পোষ্ট অনেকেই শেয়ার করেন। কার্যত ভাইরাল হয়ে যায় বিধায়কের বিরুদ্ধে তার বিষোদগার ।।