এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১২ আগস্ট : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে পৃথক ঘটনায় আত্মঘাতী হলেন এক উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রীসহ ২ জন । পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম পম্পা মাজি(১৭) ও সুব্রত সোম(৪৩) । পম্পার বাড়ি ভাতার থানার পানোয়া গ্রামে । বুধবার বিকেলে বাড়ির একটি ঘর থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া খুলন্ত দেহটি উদ্ধার হয় । আগামী শুক্রবার পম্পার বিয়ের কথা ছিল বলে জানা গেছে ।
অন্যদিকে ভাতারের কুমারুন গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত সোমকে বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয় । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । পুলিশ দুটি পৃথক অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করেছে । বৃহস্পতিবার মৃতদেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে,পানোয়া গ্রামের বাগদিপাড়ার বাসিন্দা পম্পা মাজিরা ২ বোন ও ১ ভাই । পম্পা বড় । তাদের বাবা তারক মাজি জনমজুরির কাজ করেন । পম্পা বামুনাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত । আগামী বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তার । এদিকে তার বিয়েরও যোগাযোগ করেছিল পরিবারের লোকজন । শুক্রবার ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান । তার জন্য স্কুল থেকে শংসাপত্র আনা , সরকারি অনুদানের জন্য আবেদন করার কাজ পম্পা একাই করছিল ।
জানা গেছে, বুধবার ওই সমস্ত কাজকর্ম সেরে দুপুর নাগাদ বাড়ি ফেরে পম্পা । তারপর খাওয়া দাওয়া সেরে নিজের ঘরে বিশ্রাম করতে চলে যায় । শেষে বিকেল নাগাদ ঘরের মধ্যে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় । মৃতার কাকা লেবু মাজির দাবি পড়াশোনা না করায় বাড়িতে বকাঝকা করার কারনেই অভিমানে আত্মঘাতী হয়েছে পম্পা । যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি,ওই ছাত্রীর আত্মঘাতী হওয়ার পিছনে প্রণয়ঘটিত কারন রয়েছে ।
অন্যদিকে জানা গেছে,কুমারুন গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত সোম তাঁদের মূল বাড়ির কিছুটা পাশেই আরও একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন । বুধবার দুপুর নাগাদ তিনি নতুন বাড়ির ঘরগুলি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে গিয়েছিলেন । কিন্তু দীর্ঘক্ষন পরেও তিনি বাড়ি ফিরছেন না দেখে বাড়ির লোকজন তাঁকে খুঁজতে যায় । তখন ওই বাড়ির একটি ঘরের মধ্যে সুব্রতবাবুকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পাওয়া যায় । এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । জানা গেছে,কিছুদিন আগে সুব্রতবাবুর স্ত্রী রাগারাগি করে বাপের বাড়ি চলে গেছেন । তারপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন । তার জেরেই হতাশা থেকে ওই ব্যক্তি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের ।।