এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৭ মার্চ : মায়ের চোখের সামনেই ভাগীরথীর তলিয়ে গেল ২২ বছরের তরতাজা ছেলে । ছেলেকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে জলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মা । কিন্তু ততক্ষণে ছেলে স্রোতের টানে গভীর জলে তলিয়ে যায় । নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন মাকে নদীর জল থেকে তুলে প্রাণে বাঁচালেও তাঁর ছেলের কোন সন্ধান করতে পারেনি । আজ রবিবার মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার ভাগীরথীর বাজারেঘাটে । জানা গেছে নিখোঁজ তরুণের নাম বিজন কুণ্ডু । তার বাড়ি ভাতার থানার ভাঁটাকুল গ্রামে । এদিন মা মীরা কুণ্ডু ও দুই মাসিকে সাথে নিয়ে কাটোয়ায় গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছিলেন বিজন । কিন্তু তার আর বাড়ি ফেরা হলো না । দুর্ঘটনার পর নদীর ঘাটে শোকে ভেঙে পড়েন তরুণের মা ও মাসিরা । বর্তমানে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ওই যুবকের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে নদীর জলে ।
জানা গেছে,মীরা কুণ্ডুর এক বোন রূপালি দের বিয়ে হয়েছে ভাতারের নাসিগ্রামে । অন্য বোন দীপালিদেবীর শ্বশুর বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানা এলাকায় । মূলত দীপালিদেবীর গঙ্গা স্নানের ইচ্ছাতেই আজ রবিবার সকালে মা ও দুই মাসিকে নিয়ে কাটোয়া গিয়েছিলেন বিজন । বিজনের দুই মাসী ভাটার থেকে ট্রেন ধরেন । বলগোনাই মাকে নিয়ে ট্রেনে ওঠেন বিজন । তারপর চারজন মিলে তারা কাটোয়ায় যান ।
জানা গেছে,মা ও মাসিদের নিয়ে কাটোয়ার বাজারেঘাটে গঙ্গাস্নান করছিলেন ওই যুবক । মা ও দুই মাসের স্নান শেষ হওয়ার পর নদীতে নামেন বিজন । হঠাৎ মীরাদেবী লক্ষ্য করেন তার ছেলের জলের ওপর দু হাত তুলে যেন বাঁচার চেষ্টা করছে । তিনি কিছু চিন্তাভাবনা না করেই জলে ঝাঁপ দিয়ে দেন । কিন্তু তখন নদীর ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন মীরাদেবীকে দ্রুত জল থেকে তুলে ফেলেন । তারপর তার ছেলের সন্ধান চালাতে শুরু করেন স্থানীয়রা । কিন্তু যুবকের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি । এরপর খবর পেয়ে ঘটনা তোলা আসে কাটোয়া থানার পুলিশ । পরে বিপর্যয় মোকাবেলা দফতরের কর্মীরা এসে তল্লাশি অভিযান শুরু করে ।
জানা গেছে, বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান বিজন কুণ্ডু মালডাঙ্গা কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পর কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন এবং চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । তার বাবা বিকাশ কুণ্ডু একটি চালকলে রান্নার কাছ করেন। অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবার । এখন একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ওই দম্পতি । শোকোস্তব্ধ গোটা গ্রাম ।।