এইদিন ওয়েবডেস্ক,১২ এপ্রিল : ইরাকি বংশভূত ৩৭ বছরের খ্রিস্টান ‘নাস্তিক’ সালওয়ান মমিকা প্রকাশ্যে ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান পোড়ানোর জন্য বিশ্বজুড়ে একটি সুপরিচিত নাম । গত মার্চে সুইডেন থেকে নরওয়েতে আশ্রয় নিয়েছিলেন মমিকা । কিন্তু মার্চের শেষের দিকে হঠাৎ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবরে তোলপাড় পড়ে যায় । অবশেষে মৃত্যুর খবরকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিলেন তিনি । বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কয়েকটি টুইট করেছেন সালওয়ান মমিকা । পাশাপাশি মুসলিম তোষামোদকারী নরওয়েকে তুলোধুনো করে সেদেশের বিচারককে “মূর্খ বুড়ো” বলে কটাক্ষ করেছেন ।
মোমিকা লিখেছেন,’নরওয়েতে আমার মৃত্যুর খবর যে সংবাদপত্র এবং নিউজ সাইটগুলি প্রকাশ করেছে তা মিথ্যা এবং তাদের লক্ষ্য হল ইসলামকে সন্দেহ বা সমালোচনাকারী সবাইকে ভয় দেখানো। তাই বলছি, আপনাদের গুজব ও মিথ্যা মিডিয়া আমাদের ভয় দেখাবে না। আমি বেঁচে আছি এবং নরওয়েজিয়ান কর্তৃপক্ষের দ্বারা আমার উপর অবিচার করা সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ করব না।’ নরওয়েতে তার উপর ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীর বিবরণ দিয়ে তিনি বলেছেন,’আমি যেখানে পৌঁছেছিলাম, তারা আমাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে এবং আমার ফোন কেড়ে নেয়। তারা আমাকে কারও সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি , তারপর তারা আমাকে আদালতে নিয়ে যায়, যেখানে আদালত আমাকে নিম্নলিখিত অভিযোগে অভিযুক্ত করে: “আপনাকে আটক করা হয়েছে কারণ আপনি নরওয়েজিয়ান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।” মূর্খ বুড়ো বিচারককে ইসলামের প্রতি অনুরাগী মনে হলো, তাই আমি তাকে বললাম, তোমার কারাদণ্ড বা আদালত আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না। মনে হচ্ছে ইসলাম আপনার দেশ দখল করে এবং আপনার মেয়েদের ধর্ষণ করলেও আপনি খুশি। পুলিশ আমাকে আদালতের বাইরে নিয়ে যায় এবং মানবাধিকার সংস্থার তত্ত্বাবধানের বাইরে এবং মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে গোপন কারাগারে রাখে।’
অন্য একটি টুইটে সালওয়ান মমিকা লিখেছেন, ‘নরওয়েতে আমার সাথে যা ঘটেছিল তা আমাকে সাদ্দাম হোসেনের অত্যাচারী স্বৈরাচারী শাসনের কথা মনে করিয়ে দেয়, এবং এইভাবে নরওয়ে গণতন্ত্রকে গুলি করে যখন আমাকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং আমাকে বলেছিল, “তুমি নরওয়েজিয়ান জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।” এই সবই শুধুমাত্র এই কারণে যে আমি আমার স্বাধীনতা প্রয়োগ করেছি, আমার মতামত প্রকাশ করেছি এবং কোরান পুড়িয়েছি। “প্যারাডাইস” নামস আমি যে বইটি লিখছি তাতে আমি নরওয়ের কথা উল্লেখ করব। এই দেশ মূর্খ এবং নির্বোধদের দ্বারা শাসিত হয় যারা ইসলামের প্রেমে পড়ে।’ পরিশেষে তিনি লিখেছেন,’আমার বন্ধুরা, আমি ঠিক নেই। আমি স্বাধীনতার মূল্য এবং সত্য শব্দের মূল্য পরিশোধ করছি । সারা বিশ্ব আমার বিরুদ্ধে এবং নরওয়ে স্বাধীনতার হৃদয়ে বুলেট ছুড়েছে।’
সালওয়ান মমিকা ইরাক থেকে পালিয়ে এসে সুইডেনে আশ্রয় নিয়েছিলেন । নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেও সুইডেন তাকে ইরাকে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল । তারই মাঝে গত মার্চে নরওয়েতে চলে যান মোমিকা । কিন্তু নরওয়ের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে । এখন ওই যুবক কোন দেশে আছেন তা স্পষ্ট নয় ।।