এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ সেপ্টেম্বর : শনিবার দুপুর ১ টা নাগাদ স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আরজি করের ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ-খুনের ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভরত জুনিয়র চিকিৎসকদের মঞ্চে আচমকা উপস্থিত হয়ে ‘মাস্টার স্ট্রোক’ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । কিন্তু তার ‘অ্যাডভান্টেজ’ বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি তিনি । রাতের দিকে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে থেকে যখন চুড়ান্ত অপমানিত হয়ে কয়েক ঘন্টা ধরে বৃষ্টিতে ভেজা ডাক্তারি পড়ুয়াদের কাঁদতে কাঁদতে ফিরে যেতে হয় তখন গোটা দেশের ‘সহানুভূতি’ কেড়ে নেয় তারা । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় ওঠে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে । এই ঘটনাক্রমের মাঝে ফের আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলার একটা নাটকীয় মোড় নেয় । ধর্ষণ-খুনের মামলায় প্রমান লোপাটের অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই । তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশ জুড়ে । এদিকে জোড়া গ্রেফতারর পর জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন আরও উজ্জীবিত হয়ে যায় ।
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভরত জুনিয়র চিকিৎসকদের একজনকে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘আজকে ৩৫ দিনের আমাদের এই যুদ্ধের একটা পুরস্কার মাত্র আমরা পেলাম । যে মানুষটার বিরুদ্ধে পুরো আরজি কর, পুরো বাংলা, পুরো দেশ দাঁড়িয়েছে সেই সন্দীপ ঘোষ আজ ধরা পড়েছে । আমরা বারবার করে বলেছিলাম এই হচ্ছে সেই সন্দীপ ঘোষ যে থ্রেট কালচারের মাথায় রয়েছে । এই হচ্ছে সেই সন্দীপ ঘোষ যে চতুর্দিকে দুর্নীতি করে গেছে । আজকের সিবিআইকে কুর্নিশ জানাই, কারণ সিবিআই দেখিয়ে দিল এই হত্যাকাণ্ডে সন্দীপও ছিল । আমরা আমাদের বোনের বিচারের দিকে একটা সদর্থক পদক্ষেপ নিতে পারলাম । আমরা প্রথম দিন থেকে বলে আসছি উই ওয়ান্ট জাস্টিস । উই উইল কিপ অন গেটিং জাস্টিস । আমাদের বোনের সাথে যেটা হয়েছে সেটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক মার্ডার । এই কাজ কোন একটি ব্যক্তির দ্বারা করা হতে পারে না । আমরা প্রথম দিন থেকে এই বিশ্বাস নিয়ে আন্দোলনের নেমেছি । আজকের সেইগুলো প্রমাণিত হচ্ছে । আজকে কান এসেছে,কান টানলে মাথাও আসবে ।’
আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের ওই জুনিয়র চিকিৎসকের বক্তব্যের ভিডিও এক্স-এ পোস্ট করে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লিখেছেন,’সিবিআই টালা থানার অফিসার ইনচার্জ অভিজিৎ মণ্ডল এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে, যুবতী মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে প্রমাণ লোপাটের জন্য । অভিজিৎ মণ্ডল সেই একই ব্যক্তি যার প্রতিরক্ষায় সামনে এসেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গ্রেপ্তার এড়াতে তাদের ওসিকে ভর্তি করার জন্য কলকাতা পুলিশের চক্রান্তকে অগ্রাহ্য করেছিল হাসপাতালগুলি এবং এজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালের একজনের প্রোমোটারকে ফোন করে হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন
প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে নৃশংস অপরাধটি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির ফল, যা বাংলার জনস্বাস্থ্যকে ধ্বংস করেছে। টালা ওসি ও সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। কলকাতা পুলিশের কমিশনারও মৃত তরুনী চিকিৎসকের পরিচয় প্রকাশ করতে এবং অপরাধ ধামাচাপা দিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তী লাইনে থাকতে পারেন।’।