এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২২ এপ্রিল : মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের দুর্নীতি নিয়ে গান গেয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের রাজবংশী শিল্পী মণীন্দ্র বর্মন । একটি ভিডিও বার্তায় শিল্পি অভিযোগ করেছিলেন যে স্থানীয় মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশ প্রতিদিন গিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে এবং হুমকি দিয়ে আসছে । পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও বাড়িতে চড়াও হয়ে হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি । যেকারণে তাকে আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছিল । সোমবার রাতে বিধানসভার গেটের সামনে শিল্পিকে পাশে নিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বললেন,’ক্ষমতা থাকলে শিল্পি মনিন্দ্র বর্মনের কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখুন । উনি আমার কাছেন এবং থাকবেন ।’
প্রসঙ্গত,মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের একের পর এক দুর্নীতির প্রতিবাদে “ও পিসি যা ইচ্ছা তাই করছ চুরি/ রাজ্যটা তোর বাপের নাকি?” গান গেয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের রাজবংশী শিল্পী মনীন্দ্র বর্মন । চলতি মাসের শুরুর দিকে তার সেই গানের ভিডিও ব্যাপক জনপ্রিয় হয় । গানটির ভাষা,ছন্দ, সুর ও গায়কী ভঙ্গি শ্রোতারা খুব পছন্দ করে । কিন্তু সেই গান ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই পুলিশ ও শাসকদলের হামলার ভয়ে ওই শিল্পি ঘরছাড়া হয়ে যান বলে অভিযোগ ।
এরপর সোমবার শিল্পি মণীদ্র বর্মনকে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে । সাংবাদিক সম্মেলনে শিল্পির কাঁধে হাত রেখে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’মণীদ্র বর্মনের বাড়ি কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গায় । উনি ছাব্বিশ হাজার চাকরি চুরি নিয়ে একটা ভাওয়াইয়া গান গেয়েছিলেন । যে গানের এক কোটির বেশি ভিউয়ার্স হয়েছে । সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি খুব জনপ্রিয় হয়েছেন । মমতার পুলিশ এই রাজবংশী সমাজের অত্যন্ত লোকপ্রিয় শিল্পীকে চাকরি চুরির বিরুদ্ধে গান গাওয়ার জন্য ৪ বার তার বাড়িতে হানা দিয়েছে । গ্রেপ্তার করতে চায় । ওনাকে টেলিফোনে মাথাভাঙ্গার পুলিশ বলেছে, গানটা ডিলিট করে দিতে হবে এবং মোবাইল ফোন জমা দিতে হবে ।উনি আমার সঙ্গে টেলিফোনে ৬-৭ দিন ধরেই সংস্পর্শে ছিলেন ।’ এরপর তিনি বলেন,’আমি কোচবিহারে এসপিতে চ্যালেঞ্জ করছি, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে মণীদ্র বর্মন আছেন এবং থাকবেন । আপনার যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে ওনার কেশাগ্র স্পর্শ করে দেখুন । ওইসব পিঁয়াজি অনেক করেছেন । মাথাভাঙ্গার আইসি এবং কোচবিহারের পুলিশ সুপারের বেতনটা কোন পিসি-ভাইপো দেয় না । ট্যাক্সের টাকায় পান ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’যেহেতু পুলিশ ওনাকে লিখিত নোটিশ দেয়নি, তাই এফআইআর করেছে কিনা আজ পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি । আমরা আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আজকেই মাথাভাঙ্গা থানা এবং কোচবিহারের এসপিকে ইমেইল করব, যদি কোন অভিযোগ থাকে বা কোন এফআইআর করে থাকেন কপি ফরওয়ার্ড করতে । তারপরে আমরা জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে পুলিশের বিরুদ্ধে অনৈতিক,বেআইনি,রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমরা মণীন্দ্র বর্মনকে আইনি সহযোগিতা দিয়ে পাঠিয়ে দেব ।’ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মনিন্দ্র বর্মন বিরোধী দলনেতার কাছে আছেন এবং থাকবেন । আমি তাকে সমস্ত রকম সহযোগিতা দেব৷’।