এইদিন বিনোদন ডেস্ক,০৪ আগস্ট : দক্ষিণের সুপারস্টার প্রভাস ও বলিউড অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া অভিনীত ‘বাহুবলী: দ্য বিগিনিং’ মুক্তি পায় ২০১৫ সালে । ছবির একটি দৃশ্যে নায়ক প্রভাসের সামনে শরীরের উর্ধাঙ্গের পোশাক খুলে ফেলতে হয় তামান্না ভাটিয়াকে । যার জেরে বিতর্ক তৈরি হয় । সংবাদপত্রে ‘অবন্তিকার ধর্ষণ’ শিরোনামের প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল । যদিও এযাবৎ অভিনেত্রী এনিয়ে মুখ খোলেননি । অবশেষে নীরবতা ভেঙে সমালোচকদের জবাব দিয়েছেন তিনি ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, তামান্না ভাটিয়া এনিয়ে বলেছেন,, ‘মানুষ যখন তোমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তখন তারা একটা কৌশল অবলম্বন করে। এই কৌশলটি হল লজ্জা এবং অপরাধবোধকে ইস্যু করে তোমার মধ্যে এমন অনুভূতির জন্ম দিতে চায় যে তাতে লজ্জিত হও । আর এই ধরণের লোকেরা যখন তোমার মধ্যে এইরকম অনুভূতি জাগাতে সক্ষম হয়,তখন তারা তোমার উপর নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় ।’
তামান্না ভাটিয়া ‘যৌনতা’কে খুব পবিত্র বিষয় আখ্যা দিয়ে বলেন,’যে জিনিসটা খুব পবিত্র, সেটাকে আমরা সবচেয়ে নোংরা চোখে দেখি। আর এই মনোভাব আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের জীবনের সেই দিকটা নিয়ে লজ্জিত হওয়া উচিত, আমাদের সেটা লুকিয়ে রাখা উচিত, আমাদের এটা নিয়ে কথা বলা উচিত নয়, অথবা আমরা এটা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলতে পারি না। এনিয়ে কথা বললেই মানুষ সবসময় তোমায় স্মরণ করিয়ে দিতে চায় যে তুমি কিছু একটা ভুল করেছো। কিন্তু তারা এটা ভেবে দেখে না যে এটাই জীবনের সবচেয়ে মৌলিক বিষয়। এই কারণেই আজ আমরা এই পৃথিবীতে এসেছি । আমি আজ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি যে তুমি যখন কোন ছবি দেখো, তখন সেটা পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি এবং তবুও মানুষ সেটা বিচার করে ।’
ছবিটির পরিচালক এসএস রাজামৌলির দৃষ্টিকোন ব্যাখ্যা করে তামান্না ভাটিয়া বলেছেন,’আমার মনে আছে যখন দৃশ্যগ্রহণের আগে রাজামৌলি স্যার আমাকে পুরো দৃশ্যটি ব্যাখ্যা করছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে তিনি একজন ঐশ্বরিক নারী, যিনি ভেতরে দুঃখী, তিনি সুন্দরী, তিনি নারীত্বে পরিপূর্ণ, তিনি ভালোবাসা পেতে চান, কিন্তু তিনি তার জীবনে এত কষ্ট পেয়েছেন যে তিনি মনে করেন যে সবার কাছ থেকে তার দূরে রাখা উচিত । তিনি কাউকে তার কাছে আসতে দেন না কারণ তিনি ভয় পান যে লোকেরা তার সুবিধা নেবে। সেই কারণেই তিনি সীমানা বজায় রাখেন । গল্পে এমন একজন ছেলে আছেন যিনি কেবল তাকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন যাতে মহিলাটি তিনি দেখতে পারে যে আদপে তিনি কত সুন্দর।’
তামান্না আরও বলেন, ‘যদি আপনি দৃশ্যটি দেখেন, তাহলে এর মধ্যে একটি সম্পূর্ণ সিকোয়েন্স ছিল। কানের দুল পরা হয়, বিন্দি পরা হয়। তারপর যখন সে নিজের দিকে তাকায়, তার মুখের দিকে তাকায়, তখন সে দেখতে পায় যে আরে আমার সবসময় মনে হত যে আমাকে একজন যোদ্ধা হিসেবে বাঁচতে হবে। সেই মহিলা নিজেকে এতটাই শক্তিশালী করে তুলেছিলেন যে তার মধ্যে থাকা নম্রতা, নির্দোষতা কোথাও হারিয়ে গিয়েছিল এবং এখানেই শিবের(নায়ক) চরিত্র তাকে তার আসল আত্মার সাথে পুনরায় সংযুক্ত করে।’
সব শেষে তামান্না ভাটিয়া বলেন, ‘এটা ছিল পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি। একজন পরিচালক সবকিছু এভাবেই দেখেন কারণ সবাই নিজের মতো করে জিনিস বোঝে। আপনি যেকোনো কিছু দেখাতে পারেন, এমনকি যদি আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র জিনিসটিও দেখান, যদি কেউ মনে করে যে যৌনতা একটি খারাপ জিনিস বা শরীর একটি খারাপ জিনিস, তারা কেবল এটাই দেখবে কারণ এটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, এটাই তাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে গ্রথিত । একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা আপনাকে খুব সুন্দর দেখাতে চান, কিন্তু আপনি যদি অন্য কিছু দেখেন, তবে এটি আপনার বিষয় ।’।