এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,০৬ মে : ভারতের সাথে যুদ্ধের আশঙ্কার মধ্যে, পাকিস্তানের একটি মসজিদ থেকে যে ঘোষণা করা হয়েছে তাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড কাঁপছে। খাইবার পাখতুনখোয়ার মসজিদগুলি, যেখানে তেহরিক-ই- তালিবানের প্রভাব রয়েছে, যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে। মসজিদের একজন প্রভাবশালী মওলানাকে মসজিদের ভেতর থেকে ঘোষণা করতে শোনা গেছে, “আমি কোরানের শপথ করছি যে ভারত আক্রমণ করলে আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সমর্থন করব।” সে সময়, মাওলানার হাতে কোরান ছিল । এই ভিডিওটি খাইবার পাখতুনখোয়ার। সেখানে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী স্থানীয় জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংস অভিযান চালায়, যার ফলে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়,নিখোঁজ হয়, যেমন বেলুচিস্তানে। অতএব, পাকিস্তানের ভেতরে এখন স্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে যে জিন্নাহর দেশ কেবল বাইরে থেকে নয়, ভেতর থেকেও ভেঙে পড়ছে। একদিকে, খাইবার পাখতুনখোয়ার একজন বিখ্যাত ইসলামিক ধর্মগুরু একটি মসজিদ থেকে খোলাখুলি ঘোষণা করছেন যে “যদি ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করে, আমরা পশতুনরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে নয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে দাঁড়াবো।” ইসলামাবাদের কুখ্যাত লাল মসজিদে, একজন ধর্মগুরু সেখানে সমবেত শত শত শ্রোতাকে সম্বোধন করে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “যদি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে পাকিস্তানের পাশে কে দাঁড়াবে?” তখন পুরো মসজিদে একটি হাতও ওঠেনি।
খাইবার পাখতুনখোয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন ঘোষণা করা এই ধর্মগুরু একজন প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা এবং তিনি প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন । তিনি বলেন,”আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি যা বলছি তা মনোযোগ সহকারে শুনুন। যদি কেউ আমাকে গ্রেপ্তার করতে চায়, তারা তা করতে পারে। কিন্তু আমি কোরানের শপথ করে বলছি যে আমি যখন আগে জেলে ছিলাম, তখন সেখানকার বন্দীরা ভারত আক্রমণ করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করত।” ভিডিওতে মাওলানা আরও বলেন, “আমরা শীঘ্রই পাকিস্তান ছেড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেব। দেখো পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের সাথে কী করেছে। আমি কোরানের শপথ করে বলছি যে আমি যদি মিথ্যা বলি, তাহলে ঈশ্বর আমাকে ক্ষমা করবেন না… কিন্তু তোমরা পশতুনদের ধ্বংস করেছ আর তোমরা ভাবছো আমরা তোমাদের সমর্থন করব? তুমি আশা করো আমরা তোমাদের জন্য ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেব… তোমরা আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছ, কোন পশতুন শিশু তোমাদের জন্য চোখের জল ফেলোনি?” ।
পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্য মওলানা প্রশ্ন,”হে আল্লাহ, পশতুনদের বাচ্চারা যেমন কাঁদে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বাচ্চাদেরও একইভাবে কাঁদা উচিত। পশতুনদের বাড়ির মতো তাদের বাড়িতেও শোক প্রকাশ করা উচিত। কারণ সোয়াত এবং মালাকান্দে, প্রতিটি পরিবার সেনাবাহিনীর কারণে শোকাহত। প্রতিটি পরিবার দুই থেকে তিনজনকে হারিয়েছে এবং আপনি কি মনে করেন আমরা আপনাকে সমর্থন করব ?”
খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হাজার হাজার মানুষকে গুম করেছে, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, যার ফলে এই উভয় প্রদেশেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মাওলানার এই বক্তব্য পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে, যা নিজেকে একটি শক্তিশালী ইসলামী জাতি হিসেবে চিত্রিত করে।
একইভাবে, যখন মাওলানা জিজ্ঞাসা করলেন যে ভারতীয় সেনাবাহিনী লাল মসজিদে আক্রমণ করলে পাকিস্তানকেকে সমর্থন করবে, তখন একজনও হাত তোলেনি। লাল মসজিদ ইসলামাবাদের একটি কুখ্যাত মসজিদ যেখানে মৌলবাদীদের জন্য একটি স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। এখানে, মৌলবাদীরা প্রায়শই অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হয়। পাকিস্তানের রাজনীতিতে লাল মসজিদের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু যখন সেখানকার ধর্মগুরু আবেগঘন আবেদন জানান, “ভারত আক্রমণ করলে পাকিস্তানের পাশে কে দাঁড়াবে?” তারপর পুরো হল জুড়ে নীরবতা নেমে এলো। পাকিস্তানের সমর্থনে কেউ হাত তোলেনি। এই সেই লাল মসজিদ যেখানে ২০০৭ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু করার কথা ছিল। তালিবান মতাদর্শ এখান থেকেই লালিত হয়েছিল। কিন্তু এখনও, কেউ পাকিস্তানের জন্য মরতে রাজি নয়।।
https://twitter.com/sidhant/status/1919273516605612294?t=PSeknlvEsiYn1h5Xr-GT-A&s=19