এইদিন ওয়েবডেস্ক,বরিশাল(বাংলাদেশ),০৫ অক্টোবর : শারদোৎস আবহের মাঝেই বাংলাদেশে প্রতিমা ভাঙচুর অব্যাহত আছে । এবারে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দুর্গাপূজা মণ্ডপের তিনটি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে জিহাদিরা । শুক্রবার ভোরে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১২ নম্বর রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম শ্যামপুর দেউড়ি বাড়ী সার্বজনীন শ্রীশ্রী দুর্গামন্দিরে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে । প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার শ্যামপুর এলাকায় কল্যাণ গুহ নামে এক ব্যক্তির পারিবারিক মন্দিরেও ।
এই সমস্ত ঘটনার পর বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মোহম্মদ শফিকুল ইসলামকে সরিয়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোস্তফাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে এসপি মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানিয়েছেন। এদিকে উলটে পূজো কমিটির ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন এসপি মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন । তার কথায়, ‘বিষয়টির অনুসন্ধান ছাড়া নিশ্চিত কিছু বলা যাবে না।মণ্ডপ কমিটির প্রতি আমাদের নির্দেশনা ছিল, সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবক রাখার। কিন্তু তারা রাখেনি। এক্ষেত্রে মণ্ডপের কর্তৃপক্ষও দায় এড়াতে পারে না।’
পশ্চিম শ্যামপুর দেউরী বাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শংকর দেউরী বলেন, গত রাত দেড়টা পর্যন্ত মন্দিরে ছিলাম আমরা । এরপর সবাই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি । সকালে এসে দেখতে পাই যে দুর্গা, লক্ষ্মী ও কার্তিক প্রতিমার মাথা ভেঙে ফেলা হয়েছে।কারা করেছেন, এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই জানিয়ে শংকর দেউরী বলেন,’গত ১১ বছর ধরে এই মণ্ডপে পূজা হয়। এই প্রথমবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’ তবে পূজার আগে পুনরায় প্রতিমা তৈরি সম্ভব হবে জানিয়ে তিনি বলেন,প্রতিমায় শুধু রং করার কাজ বাকি ছিল।’ এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করবেন না বলেও জানিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক।
এদিকে, খবর পেয়ে বরিশালের ডিসি, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাকেরগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্ব পাওয়া গোলাম মোস্তফা বলেন,’তিনটি প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। এর মধ্যে একটির মাথা ভেঙে পায়ের কাছে রাখা হয়েছে। আরেকটির মাথা ভেঙে ঝুলিয়ে রাখা হয়। অন্যটির হাত ভেঙে ফেলা হয়েছে।’ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
এলাকার একজন প্রবীন ব্যক্তি বলেন,’কখনো ভাবিনি আমাদের গ্রামেরও এমন একটা কাজ করতে পারে ।’ ওই এলাকার একজন সমাজসেবক এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন,’আমরা এযাবৎ কখনো দেখিনি এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে ।আমরা তীব্র প্রতিবাদ, দুঃখ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেছেন,’এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের একান্তই উচিত হবে বাকেরগঞ্জ উপজেলার সকল পূজামন্দিরে প্রতিকী পূজার মাধ্যমে ঘট পূজা দিয়ে মাকে চলতি বছরে বন্দনা করা। সকল পূজা মন্ডপে কালো পতাকা টানানো, সকলে কালো ব্যাজ পরা ।পাশাপাশি আগামীকাল প্রত্যেক মন্দিরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হোক।’ তিনি আরও বলেন,’হিন্দু ধর্মের ভাইবোন সবাইকে এক হতে হবে।মায়ের সাথে এবার আমাদেরও অসুর বিনাশ করতে হবে ।এর কঠোর বিচার চাই।’
উল্লেখ্য,বাকেরগঞ্জের পশ্চিম শ্যামপুর দেউরি বাড়ি সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে প্রতীমা ভাঙচুর করা হয় বৃহস্পতি ও শুক্রবার মধ্যবর্তী রাতে। শ্যামপুরে ২ মাত্র টা পূজা হয়, এর মধ্যে একটা জমিদার নাটু বাবুর বাড়ি এবং অন্যটা এই দেউরি বাড়িতে । যা গতকাল দুর্বীর্ত্তরা হামলা চলিয়ে ভাঙচুর চালায়।।