জহিরুল হক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১১ জানুয়ারী : মুখ্যমন্ত্রীর হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খেলাধুলার প্রসারে,খেলার জগতে বাংলার অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং বাংলার যুব সমাজকে মাঠমুখী করতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে রাজ্যের যুব সম্প্রদায় যেমন খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ ফিরে পাচ্ছে তেমনি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে খেলার মাঠ সংস্কার ।
মঙ্গলকোটের একেএম হাই স্কুলের খেলার মাঠটি হলো এলাকার একমাত্র উপযুক্ত খেলার মাঠ । আশেপাশের নতুনহাট, বকশিনগর, পুরাতনহাট, বরাগর সহ বহু গ্রামের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন এই মাঠে ফুটবল, ক্রিকেট সহ বিভিন্ন খেলার অনুশীলনী করে। এছাড়াও পঞ্চায়েত স্তর, ব্লক স্তর ও জেলা স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খেলা প্রায়ই এই মাঠেই আয়োজিত হয়। সম্প্রতি এই মাঠেই মঙ্গলকোট থানার উদ্যোগে দুই দিন-রাত্রি ব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতা হয়। সেই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দলের হয়ে বেশ কিছু বিদেশী ফুটবলার অংশগ্রহণ করে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জমায়েতও এই মাঠেই হয় ।
কিন্তু উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও মাঠের সীমানা প্রাচীর না থাকার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আশে পাশের কৃষিজমিতে এই মাঠের বেশ কিছুটা অংশ চলে যায়। যার জন্য মাঠটি আয়তনে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে যাচ্ছিল। এলাকার একমাত্র খেলার মাঠটির অবস্থা দেখে এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই মাঠটির সংস্কারের দাবি ওঠে ।
অন্যদিকে মঙ্গলকোট থানার আইসি পিন্টু মুখোপাধ্যায়ও মাঠটির বর্তমান অবস্থা লক্ষ্য করেন এবং মাঠটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগী হন। এ ব্যাপারে তাঁকে সহযোগিতা করছেন মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী এবং মঙ্গলকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শান্ত সরকার প্রমুখ ।
সংস্কারের প্রাথমিক অঙ্গ হিসাবে কিছুদিন আগে মঙ্গলকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় আইসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় আমিন নিয়ে এসে মাঠটির মাপজোক করান। দেখা যায় মাঠের বেশ কিছুটা অংশ আশেপাশের কৃষি জমিতে চলে গেছে। তখনই সিদ্ধান্ত হয় এইভাবে বেদখলের হাত থেকে মাঠটিকে রক্ষা করতে হলে সীমানা পাঁচিলের প্রয়োজন । বর্তমানে চারিদিকে সীমানা পাঁচিল দিয়ে মাঠটিকে ঘেরার কাজ চলছে।আইসি সাহেব স্বয়ং এবং অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত থেকে সেই কাজের তত্ত্বাবধান করছেন। নতুন থানার পাশেই ৭ নম্বর রাজ্য সড়ক থেকে মোটামুটি ১৫০-২০০ মিটার দূরে অবস্থিত ‘লালডাঙা’ মাঠটিতে যাওয়ার জন্য কোনো উপযুক্ত রাস্তা নাই। মাঠে যাওয়ার জন্য আলপথ ব্যবহার করতে হয়। আইসির আবেদনে সাড়া দিয়ে মঙ্গলকোটের উপপ্রধান শান্ত সরকার মাঠে যাওয়ার রাস্তার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন বলে জানা গেছে ।
আইসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় বলেন,’কিছুদিন আগে মঙ্গলকোট থানার উদ্যোগে দুই দিন-রাত্রি ব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা মাঠটি সংস্কারের জন্য আমার কাছে অনুরোধ করেন। তাই আমি উদ্যোগী হই এবং স্থানীয় বিধায়ক ও পঞ্চায়েতের সহযোগিতা চাই । সবার মিলিত প্রচেষ্টায় মাঠটি ঘেরার কাজ চলছে। সেই কাজ সম্পন্ন হলেই মাঠে মাটি ফেলার কাজ শুরু হবে। মাঠটি যাতে সুন্দর অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় তারজন্য মাঠের চারপাশে গাছ লাগানোর ব্যাবস্থা করা হবে ।
মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ববাবু বলেন, ‘যুবসমাজকে খেলার জন্য একটি উপযুক্ত মাঠ ও সুন্দর পরিবেশ দেওয়া স্থানীয় বিধায়ক হিসাবে আমার কর্তব্য। আশা করি সবার সহযোগিতায় অচিরেই এই মাঠটি এলাকার গর্ব হয়ে উঠবে ।’
একেএম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাঠটির সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী, মঙ্গলকোট থানার আইসি পিন্টু মুখোপাধ্যায় এবং মঙ্গলকোটের উপপ্রধান চন্দন সরকার সহ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ।।