এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগনা,২৪ ডিসেম্বর : “লালকে তেরঙ্গা আমিই করেছিলাম, চারমাস পর সেটা গেরুয়া আমিই করব”-মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির “ভাইপো” অর্থাৎ অভিষেক ব্যানার্জির নির্বাচনী এলাকা ডায়মন্ড হারবারের মাটিতে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তিনি আরও জানান যে রাজ্যের সব মুসলিম নওসাদ সিদ্দিকি ও হুমায়ুন কবিরের দিকে । আর সব হিন্দু বিজেপির দিকে । তৃণমূলের জালও যাবে গামছাও যাবে ।
আজ বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার মহকুমার সাগর বিধানসভার মথুরাপুরে ‘পরিবর্তন সংকল্প সভা’য় যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা । বিশাল ভিড়ের মধ্যে ওঠে “দেখো দেখো কোন আয়া, শের আয়া শের আয়া” শ্লোগান ৷ সেই সভার শাসকদল ও রাজ্য পুলিশকে তিনি তুলোধুনো করেন৷ বিশেষ করে সাগর থানার ওসি অর্পণ নায়েক ও জেলা পুলিশ সুপার কে কোটেশ্বর রাও’য়ের নাম করে তিনি তাদের সতর্ক করে দেন । বিজেপির অভিযোগ যে সাগরে বিরোধী দলনেতার সভা করার অনুমতি দিতে চাইছিল না পুলিশ । যেকারনে তাদের আদালতের অনুমতি নিয়ে আজকে মথুরাপুরে সভা করতে হয়েছে ।
পুলিশের এই ভূমিকায় চরম ক্ষুব্ধ হতে দেখা যায় শুভেন্দু অধিকারীকে । তিনি বলেন,’আমি ছত্রাবস্থা থেকে সিপিএমের সঙ্গে লড়েছি । এরা এত অসভ্য ছিল না৷ কিন্তু তৃণমূল এতটাই ইতর, একটা মিটিং হবে কয়েক হাজার লোক আসবে, আমাদের নেতাদের কয়েকদিন ধরেই টুপি পরিয়ে ছিল যে আমরা লিখে দিচ্ছি না কিন্তু সভাটা করুন । কি করত জানেন ? আগের দিন রাত্রিবেলা বলতো ক্যানসেল । কোন সভা ক্যান্সেল করার পর বিরোধী দলনেতা কি আসতে পারে বা আসা উচিত ? এদেশে আইন তো শেষ কথা বলে । আমরা আইন মানা লোক । আমি তখন স্থানীয় নেতা নব্যেন্দু ভাইকে (বিজেপির জেলা সভাপতি নব্যেন্দু সুন্দর নস্কর) বলেছিলাম সবাইকে বিশ্বাস করবেন কিন্তু চটিচাটা পুলিশকে বিশ্বাস করবে না৷ ঠিক তাই, বাধার পর বাধা দিয়েছে ।’
তিনি বলেন,’এখানকার ওসির নাম কি ? অর্পণ নায়েক ? আমার কাছে একটা ছবি পাঠিয়ে দিয়েন । আমি গুছিয়ে রাখবো । এপ্রিল মাসের পরে এই অর্পণ কোথায় থাকো আমি দেখব । সিপিএমের সূর্য যেদিন মধ্য গগনে, সেদিন লক্ষণ সেটকে হারানো লোক আমি । ২১১ টা সিটে যখন জিতছে, আমি মমতাকে হারানোর লোক । আমি নন্দীগ্রাম করা লোক । আমি পুলিশকে ভয় পাই না । যেখানেই থাকো এপ্রিল মাসের পরে দেখা হবে। লালকে তেরঙ্গা আমিই করেছিলাম,চারমাস পর সেটা গেরুয়া আমিই করব ।’
সাগর থানার ওসির ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানোর জন্য দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়ে এরপর শুভেন্দু অধিকারী পুলিশ সুপারের উদ্দেশ্যে বলেন,’কে লিখতে বলেছে ? কোটেশ্বর ? এখানকার এসপি একটা ডাকাত । কয়লা কাণ্ডে পাঁচবার ইডি ওকে দিল্লিতে ডেকেছিল । ব্যাগ গুছিয়ে রাখুন কে কোটেশ্বর রাও । আপনার সঙ্গে ঠিক জায়গায় দেখা হবে । যস্মিন দেশে যদাচার ।
“কপিলমুনি আশ্রম থেকে ৫০ কিলোমিটারের ভেতরে” তিন মন্দিরে হামলার ঘটনাগুলি উল্লেখ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তিনটা ঘটনা খুব অশনি সংকেত । এক,সূর্য নগর কাকদ্বীপে কালীমাতাকে ভাঙচুর করে এই কোটেশ্বর রাও এর নেতৃত্বে জামাতি পুলিশ, মমতা পুলিশ, তোলাবাজ পুলিশ, হাত পেতে ঘুষ নেয়া পুলিশরা মা কালী কে প্রিজন ভ্যানে তুলেছে । এই দৃশ্য কেউ কখনো দেখেছেন?’ বাকি দুটি ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন,’চার মাস পর তৃণমূল থাকবে না । মমতা থাকবে না । মুসলমানরা সব নৌসাদ আর হুমায়ুনের দিকে । আর হিন্দু ও আদিবাসীরা সব বিজেপির দিকে । তোমার জালও যাবে গামছাও যাবে । তৃণমূলের জালও যাবে গামছা ও যাবে । তৃণমূলের আর কোন উপায় নেই ।’।

