এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ আগস্ট : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের নৃশংস বর্বরোচিত ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে । ঘটনায় যুক্ত প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার দাবি উঠছে দেশবিদেশে । কিন্তু একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং অন্যদিকে তার অধীনে থাকা পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাট ও অভিযুক্তদের আড়াল করার অভিযোগ তুলছে বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে আমজনতা । সব মিলিয়ে এই ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য । এই পরিস্থিতির মাঝে বলিউডের মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর একটি ভিডিও বার্তা সামনে এসেছে ।
রাজ্য বিজেপির এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করা ওই ভিডিওতে মিঠুন চক্রবর্তী বলেছেন,’আমি অনেকদিন ধরে, অনেক জায়গায় বারবার বলে এসেছি যে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা ভয়াবহ হয়ে উঠবে৷ কি বলবো…. বাঙালি হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি ।’ আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ধর্ষিতা মৃতা তরুণীর পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন,’পরিবারের প্রতি আমার সহানুভূতি রইল । আর যারা যারা এই ঘটনার সাথে যুক্ত তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হোক । এটাই আমার কাছে সব থেকে বড় কাম্য ।’
এদিকে নিহত তরুনী চিকিৎসকের বাবার প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে । তিনি কলকাতা পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন । সংবাদ সংস্থা এএনআই কে মৃতার বাবা বলেছেন,’যে তদন্ত করা হচ্ছে তাতে কোনও ফলাফল আসেনি। আমরা আশা করি আমরা ফলাফল পাব ।’ ফের তিনি দাবি করেছেন যে তার মেয়ের উপর বর্বরোচিত ঘটনায় আরজি কর হাসপাতালের লোকজনই জড়িত । ডিপার্টমেন্ট বা কলেজের পক্ষ থেকে তাদের সাথে কোনো সহযোগিতা করা হয়নি । অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ তাদের সঙ্গে দেখা করার কোনো আগ্রহ দেখাননি । তিনি আরও অভিযোগ করেছেন,স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতিতে তার মেয়ের দেহ যখন শ্মশানে দাহ করতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন পুলিশ তাড়াহুড়ো করে তার মেয়ের দেহ দাহ করে দেওয়া হয় । লাইনে থাকা তিনটি শবের আগে তার মেয়ের দেহ দাহ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন ।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মৃতা চিকিৎসক তরুনীর বাবা । তিনি এএনআইকে বলেছেন,’মুখ্যমন্ত্রী দোষীদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করছেন অথচ একই দাবিতে আন্দোলন করা সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করেছেন ! আমরা মুখ্যমন্ত্রীর আন্দোলন নয়, ন্যায় বিচার চাই ।’ সেই সাথে তিনি এও জানিয়েছেন, অপরাধীরা সব ধরা পড়ুক,তাদের সাজা হোক, তারপর যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তা নিয়ে ভাবা যাবে ।
এদিকে আর জি কর কাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি ও নারী নিরাপত্তার দাবিতে রবিবার ফের রাতদখল করল সাধারণ মানুষ । হাতে পোস্টার ও মশাল নিয়ে তারা ন্যায় বিচারের দাবি তোলে ৷ তরুণী থেকে বৃদ্ধা সকল নারীরা মিছিলে সামিল হয় । মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত জমায়েতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কলকাতার বিভিন্ন এলাকা । পাশাপাশি ডার্বি বাতিল হলেও আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের গ্রেফতারি ও সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে রবিবার ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকরা তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠে লাঠিচার্জের অভিযোগ ।।