শেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১১ মে : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার পালাড় গ্রামের দাসপাড়ার বধূ ক্ষান্ত মাঝি ওরফে পূজাকে খুনের ঘটনায় পুলিশের জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য । ঘাতক স্বামী বিজয় দাস কবুল করেছে যে তার স্ত্রী বেড়াতে যাওয়ার জন্য আব্দার করেছিল । কিন্তু তার কাছে টাকাপয়সা না থাকায় সে অস্বীকৃতি জানায় । এরপর তাড়ির(তাল গাছের রস) নেশায় দু’জন মধ্যে একপ্রস্ত মারামারি করে । সেই সময় স্ত্রীকে মেঝেতে ফেলে গলায় পা দিয়ে টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বিজয়। আজ রবিবার ঘাতক স্বামীকে অকুস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুননির্মান করে পুলিশ । বিজয় কিভাবে তার স্ত্রীকে খুন করেছিল তা পুলিশের সামনে অভিনয় করে দেখায় । গত সোমবার দুপুরে খুন হন ক্ষান্ত মাঝি ।
উল্লেখ্য, ভাতারের পালাড় গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা পেশায় কাঁচমিস্ত্রি বিজয় দাসের সঙ্গে প্রায় বছরখানেক আগে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার শুনুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ক্ষান্ত মাঝি ওরফে পূজার সঙ্গে সংসার বাঁধে। পূজার এটি দ্বিতীয় বিয়ে । তার প্রথম পক্ষের চার বছরের একটি সন্তান রয়েছে। প্রথম পক্ষে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় স্বামী-সন্তানকে ফেলে ফেসবুকের প্রেমিক বিজয়ের কাছে চলে আসে পুজা । তারা বিয়ে করেছিল । মাস আটেক ধরে সংসারও করে পুজা । প্রতিবেশীদের দাবি, প্রায় দিনই দুজনের মধ্যে অশান্তির হত । গত সোমবার দুপুরে দুজনের মধ্যে বচসা থেকে শুরু হয় মারপিট। এরপরই বিজয় তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ। স্ত্রীকে খুনের পর সে জানালার কাঁচে ঘুঁষি মেরে নিজের হাত ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে । তারপর রক্তাক্ত অবস্থাতেই সে পালানোর চেষ্টা করে । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে । পরে মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তার করে । ধৃতকে গত মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতে তুলে সাত দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,পুলিশের জেরায় বিজয় দাস জানিয়েছে যে ঘটনার দিন দুজনে তাড়ি বা তালগাছের রস পান করেছিল । সেই সময় বাইরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য প্রচণ্ড জেদ করে পূজা। বিজয়ের কাছে টাকাপয়সা না থাকায় সে বেড়াতে যেতে রাজি হননি। আর তাতেই মাথা গরম হয়ে যায় পূজার। দুজনের মধ্যে শুরু হয় মারপিট। প্রথমে পূজাকে লাথি মারে বিজয় । তারপর জানলায় কাঁচে ঘুঁষি মেতে নিজের ডান হাত রক্তাক্ত করে। এরপর স্ত্রীকে ঘরের মেঝেতে ফেলে গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে । পূজা নিস্তেজ হয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে । তারপর সে পালিয়ে যায় ।
আজ ঘাতক স্বামীকে নিয়ে পুননির্মান করে পুলিশ । খড়ের তৈরি একটি পুতুল বানিয়ে খুনের ঘটনা অভিনয় করে দেখায় । সেই সময় সে পুলিশের কাছে খুনের কারন ব্যাখ্যা করে । অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মৃতার বাবার বাড়ির লোকজন ।।

