প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ আগষ্ট : বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে পারেননি । তাই ভারি নোড়া দিয়ে মাথা থেঁতলে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল স্বামীর বিরুদ্ধে । সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষে অভিযুক্ত স্বামী নীলু বাগকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দিল পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা আদালত।পাশাপাশি অভিযুক্তকে দশ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে ।মঙ্গলবার কালনা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সুধীর কুমার এই সাজা ঘোষনা করেন । এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন নিহত বধূর পরিবার ।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে,নীলু বাগের বাড়ি কালনা থানার বাদলা গ্রাম পঞ্চায়েতের আনোকা গ্রামে।কালনার কৃষ্ণদেবপুরের পিয়ালি সাঁতরা ওরফে মালার সঙ্গে নীলু বাগের বিয়ে হয়।আদালতের সরকারি পক্ষের আইনজীবী মলয় পাঁজা এদিন জানিয়েছেন,বিয়ের পর থেকেই বাপের বাড়ি থেকে আরো টাকা নিয়ে আসার জন্য পিয়ালিকে চাপ দিত তাঁর স্বামী নীলু বাগ ও তার পরিবার সদস্যরা । বধূ পিয়ালি সেই দাবি না মানায় স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাঁর উপর অত্যাচার চালাতো । শ্বশুর বাড়ির চাপে পিয়ালি তাঁর বাপের বাড়িতে টাকা আনতে যায় । কিন্তু তাঁর বাবা টাকা দিতে পারেন না । হতাশ হয়ে ২০১৭ সালে ১৭ অক্টোবর বোনকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসে বধূ পিয়ালি। ওইদিন রাতে পিয়ালির বোনকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জল খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয় নীলুর পরিবার । এরপর স্বামী নীলু বাগ এবং তাঁর মা ও দিদিমা মিলে বধূ পিয়ালিও উপর অমানুষিক অত্যাচার শুরু করে । অভিযোগ তারা নোড়া দিয়ে মাথা থেঁতলে দেয় বধূ পিয়ালির মাথা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বধূকে প্রথম বৈদ্যপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র,পরে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানেই মৃত্যু হয় বধূ পিয়ালি বাগের ।
কালনা আদালতের সরকারী পক্ষের আইনজীবী মলয় পাঁজা জানিয়েছেন,বধূর এই মৃত্যু নিয়ে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ বধূর স্বামী নীলু বাগকে গ্রেপ্তার করে ।বেশ কয়েক বছর ধরে সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলে । চিকিৎসক,পুলিশ সহ মোট পনেরো জনের সাক্ষ্যগ্রহনের পর নীলু বাগকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক । এদিন তিনি অভিযুক্ত নীলু বাগকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা শোনান “। বিচারক খুনি জামাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়ায় খুশি বধূ পিয়ালির বাবা মাণিক সাঁতরা। এমন কঠোর সাজা ঘোষণার জন্য তিনি বিচারককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ।।