এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৫ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে স্ত্রীর পরকীয়া ছাড়াতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হল স্বামীকে । আসলে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভোটহাট গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে মইনুদ্দিন কর্মসূত্রে সিঙ্গাপুর থাকেন । এদিকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে চুটিয়ে পরকীয়া করে যাচ্ছিল তার স্ত্রী সোমা আক্তার ৷ খবর পেয়ে দেশে ফিরে স্ত্রীকে সম্পর্ক থেকে বের করে আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন তিনি । কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হয়ে যায় । প্রেমিককে ছাড়তে একেবারেই রাজি হননি স্ত্রী । কিন্তু সম্পর্ক থেকে সরে আসার জন্য স্বামী চাপ দিতে শুরু করলে তিনি এতটাই ক্ষিপ্ত হন যে সাথে আনা নতুন ব্লেড মইনুদ্দিনের শ্বাসনালীতে চালিয়ে দেন । হতভাগ্য স্বামী বরাত জোরে প্রাণে বেঁচে গেলেও এখনো তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । এদিকে স্বামীকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে স্ত্রী সোমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় । ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন
এর আগে একই দিন সন্ধ্যায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার সোমা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবী ইউনিয়নের তালুক মশালডাঙা গ্রামের উমর আলীর মেয়ে। দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী মইনুদ্দিন মইনুদ্দিন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফেরেন। বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, পরকীয়ায় আসক্ত স্ত্রীকে বোঝাতে সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন মইনুদ্দিন। পরে বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া ও হাতাহাতিতে গড়ালে তারই মাঝে স্বামী মইনুদ্দিনকে ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেন স্ত্রী সোমা। এই ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করেছেন আহত মইনুদ্দিনের মা মনোয়ারা বেগম।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ৪ বছর আগে মইনুদ্দিন ও সোমার বিয়ে হয়। এর এক বছরের মাথায় উন্নত জীবনের আশায় স্ত্রীকে রেখে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান মইনুদ্দিন। এদিকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সোমা। পরে বিষয়টি পরিবারের সামনে এলে স্বজনরা তাকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে এরপরও সোমা পরকীয়া থেকে না ফিরলে বিষয়টি মইনুদ্দিনকে জানানো হয়। পরবর্তীতে স্ত্রীকে বোঝাতে গত ৪ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন মইনুদ্দিন। তবে দেশে আসার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল।
পরিবারের লোকজনরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রীসহ মইনুদ্দিন সোমার বড় বোনের বাড়ি বাগভান্ডার গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে গিয়েও পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে নতুন ব্লেড দিয়ে স্বামীর গলা কেটে পালিয়ে যান সোমা। সবশেষ শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে ঘটনার পর পরিবারের লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় মইনুদ্দিনকে উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মইনুদ্দিন। ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুনিরুল ইসলাম জানান, খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। শনিবার রাতে অভিযুক্ত সোমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত মইনুদ্দিনের মা মনোয়ারা বেগম পুত্রবধূ সোমার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। আজ রবিবার আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে ।।

