এইদিন ওয়েবডেস্ক,ফরিদপুর,২২ অক্টোবর : বাবা- মায়ের শত আপত্তি অগ্রাহ্য করে মুসলিম প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় হিন্দু তরুনী । ধর্মান্তরিত হয়ে প্রেমিকের সাথে নিকাহও করে । দীর্ঘ এক দশকের অধিক সংসার । রয়েছে একটি ৬ বছরের পুত্রসন্তান । নার্সের কাজ করে মোটা টাকা রোজকার করতেন ওই মহিলা । কিন্তু সম্প্রতি স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছে তাকে তালাকনামা পাঠিয়েছে । আর সেই অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই মহিলা । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভার উত্তর শিবপুর এলাকায় । মৃতার নাম সুমনা সুক্তি । ধর্মান্তরিত হয়ে তার ইসলামি নাম রাখা হলেও বাবা-মায়ের দেওয়া নামেই নিজেকে পরিচয় দিতেন ওই মহিলা । এদিকে মহিলার মৃত্যুর পর তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাপেরবাড়িতে গিয়ে জানালে তারা মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেন । ফলে মহিলার দেহটি স্থানীয় কবরস্থানে কবরস্থ করে শ্বশুরবাড়ি ।
জানা যায়,বোয়ালমারী পৌরসভার উত্তর শিবপুর এলাকায় বাড়ি সুমনার । একই এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলামের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । বাবা-মায়ের নিষেধ অমান্য করে বছর দশেক আগে পালিয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে রবিউলকে নিকাহ করে সুমনা । বিয়ের আগে থেকেই স্থানীয় পুষ্টি ক্লিনিকের সিনিয়র নার্স হিসাবে চাকরি করতেন । মাসিক বেতন ৩০-৪০ হাজার টাকা । যেকারণে বাবা-মায়ের আপত্তিকে তিনি বিশেষ পাত্তা দেননি ।
মৃতের ভাসুর আজব শেখ বলেন,আমাদের বাবা সুমনাকে ৬ শতক জায়গা দিয়েছিল । কিন্তু আমার ভাই রবিউল ইসলাম বছর তিনেক আগে দ্বিতীয় নিকাহ করে এবং সুমনার কাছ থেকে ওই জায়গা কেড়ে নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে দেয় । এনিয়ে এমনিতেই কষ্ট পেয়েছিল সুমনা,তার উপর ভাই তাকে তালাকনামা পাঠালে সে আর স্থির থাকতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে ।
জানা যায়,সুমনা বুধবার(১৫ অক্টোবর) কর্মস্থলে থাকাকালীন ডাকযোগে স্বামীর পাঠানো তালাকনামা আসে তার কাছে । তালাকনামা হাতে পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুমনা । বিকেলে ক্লিনিক থেকে বাড়ি ফিরে আসেন । আর ওইদিন রাতেই ঘরের আড়ার সঙ্গে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন ।
ওইদিন রাত প্রায় ১২ টা নাগাদ সুমনার ছেলে তার মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করে ওঠে । পরে পরিবারের সদস্যরা দড়ি কেটে তাকে নামিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় । কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আজব শেখ বলেন, সুমনার মৃত্যুর পর আমরা তার বাবার বাড়ি গিয়েছিলাম । কিন্তু তারা স্পষ্ট জানান যে ওই মহিলা মুসলিম হওয়ার পর আমাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই । এবারে তার মৃতদেহ কবর দেবেন না ফেলে দেবেন, সেটা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে আপনারা ঠিক করুন । আমরা মৃতদেহের কোনো দায়িত্ব নেব না৷’ তিনি বলেন,’বাধ্য হয়ে আমরা আমাদের ভাতৃবধূর দেহ কবরস্থ করেছি ।’।