প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩১ জানুয়ারী : শিশু পুত্রকে মারা নিয়ে স্বামীর বারন শোনেন নি স্ত্রী।তাতেই ক্রুদ্ধ হয়ে স্ত্রীকে নৃশংস ভাবে খুন করে ফেলেছেন বলে কবুল করলেন স্বামী।নিহত বধূর নাম পূজা দলুই (২১)।নজিরবিহীন এমন হত্যা কাণ্ডের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে । পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার অন্তর্গত চকদিঘি ইলামবাজার এলাকায়। বধূর মা নির্মলা মণ্ডল তাঁর জামাই অরুপ দলুইয়ের স্বীকারক্তিকে কোন গুরুত্ব দিতে চান নি।উল্টে তিনি তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে পনের দাবিতে বধূকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।দায়ের হওয়া সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট ধারায় মমালা রুজু করে পুলিশ অভিযুক্ত জামাইকে গ্রেপ্তার করে । বৃহস্পতিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাকে ৭ দিন পুলিশ হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বধূ হত্যায় অভিযুক্ত অরুপ দলুইয়ের বাড়ি জামালপুরের চকদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ইলামবাজার এলাকায় । অরুপ পেশায় হিমঘর কর্মী।বছর চারেক আগে দেখাশুনা করে বর্ধমান থানার অন্তর্গত রায়ান এলাকার তুরুণী পূজার সঙ্গে বিয়ে হয় অরুপের। তাঁদের ৩ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বুধবার গভীর রাত পৌনে ১ টা নাগাদ বাড়ি ফিরে অরুপ তাঁর স্ত্রীকে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ উঠেছে। বধূ হত্যার খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ অরুপ দলুইয়ের বাড়িতে পৌছায় । সেখান থেকে বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি পুলিশ অভিযুক্ত অরুপ দলুইকেও পাকড়াও করে। এদিন জামালপুর থানা থেকে অরুপ দলুইকে যখন বর্ধমান আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন সাংবাদিকরা তার কাছে স্ত্রীকে খুনের কারণ জানতে চায় ।তার উত্তরে অরুপ জানান,“তাঁর শিশু পুত্রকে মারতো তাঁর স্ত্রী।কিন্তু তাঁর বারণ না শুনতো না স্ত্রী। বুধবার রাতে সেই রকম ঘটনা ঘটলে তিনি রেগে গিয়ে তাঁর গলা টিপে ধরেন । তার কারণেই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
যদিও জামাই অরুপ দলুইয়ের এই স্বীকারক্তি মানতে চাননি নিহত বধূর মা নির্মলা মণ্ডল।উল্টে তিনি তাঁর লিখিত অভিযোগে পুলিশকে যা জানিয়েছেন সেটা যথেষ্টই চমকে দেওয়ার মতন। পুলিশকে তিনি জানিয়েছে,“তিনি তাঁর মেয়ের বিয়ের সময় শ্বশুর বাড়ির দাবি মত প্রায় সব কিছুই দিয়ে ছিলেন। অর্থের অভাবে জামাইকে সোনার আংটিটা শুধু দিতে পারেন নি । পরে সময় মত দিয়ে দেবেন বলে ছিলেন।কিন্তু তাঁদের প্রতি আস্থা রাখতে পারে নি জামাই অরুপ ।সে পনের আংটির জন্য তাঁর মেয়ে পূজাকে প্রতিনিয়ত কথা শোনাতো। অশান্তি করতো, মেয়েকে মারধোর করতো। বুধবার রাতে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরে সেই সোনার আংটি নিয়েই তাঁর মেয়ের উপর অত্যাচার শুরু করে জামাই অরুপ । মেয়েকে মাটিতে ফেলে দিয়ে অরুপ তাঁর পা দিয়ে মেয়ের গলা টিপে ধরে ।সেই অত্যাচারেই তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয় বলে নির্মলা মণ্ডল পুলিশ কে জানিয়েছে।।