এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৭ জুলাই : বেআইনিভাবে মদ বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের ধরা পড়ে গিয়েছিলেন বছর পঞ্চান্নের এক প্রৌঢ় ৷ কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর অসহায়তার কথা শুনে তাঁকে কেস দিয়ে কোর্টে চালান করতে পারেনি পুলিশ । পরিবর্তে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তরুণ দে নামে ওই প্রৌঢ়কে । শুধু তাই নয়, বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য নিজের খরচে ওই প্রৌঢ়কে একটি লটারির টিকিটের দোকান করে দিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় । কাটোয়া থানার পুলিশের এই মানবিকতার প্রশংসা করেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।
জানা গেছে,কাটোয়া থানা এলাকার পানুহাট পশ্চিমপাড়ায় বাড়ি তরুণ দের । বছর ছাব্বিশ আগে তাঁর স্ত্রী মারা গেছেন । তরুনবাবুর চার মেয়ে । সকলের বিয়ে হয়ে গেছে । বাড়িতে একাই বসবাস করেন তরুনবাবু । শারিরীক দুর্বলতার কারনে তিনি ভারি কোনও কাজকর্ম করতে পারেন না । তাই নিজের পেট চালাতে সন্ধ্যা হলেই দেশি মদ বিক্রি করতেন । এই কারনে ইতিপূর্বে দু’চারবার তাঁকে জেলেও যেতে হয়েছে । কিন্তু পেট বড় বালাই । জেল থেকে ফিরে ফের একই ব্যাবসা শুরু করতেন তিনি ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনদিন আগে ফের তরুন দে’কে হাতেনাতে ধরে পুলিশ । বারবার একই অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার কারনে কাটোয়া থানার আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন । ভৎর্সনাও করেন । তাঁকে এই পেশা থেকে সরে আসার জন্য বলেন আইসি । আর তখনই নিজের অসহয়তার কথা আইসির কাছে খুলে বলে তরুনবাবু ।
জানা গেছে, তরুনবাবুর ইচ্ছায় তাঁকে একটি লটারির দোকান খুলে দেন আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় । সেই সঙ্গে ব্যাবসায় পুঁজি হিসাবে ওই প্রৌঢ়ের হাতে কিছু টাকাও তুলে দেন ওই পুলিশ আধিকারিক । শেষে মদের ব্যাবসা ছেড়ে গত শুক্রবার থেকে লটারির টিকিট বিক্রি করতে শুরু করেছেন তরুন দে নামে ওই প্রৌঢ় । তিনি বলেন, ‘তীর্থেন্দুবাবুর মত মানুষের জন্যই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পাই । একটা পুরষ্কার পড়লে আমি ওনার হাতে কিছু উপহার তুলে দিতে চাই ।’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন,পেটের দায়ে তিনি মদ বিক্রি করতেন । তবে আর নয় ।।