এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,২২ সেপ্টেম্বর : ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী বা এসআইআর এর প্রবল বিরোধিতা করছে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর দিনদুয়েক আগে হুগলিতে দলীয় কর্মসূচিতে হুমকি দিয়েছিলেন যে এরাজ্যে এসআইআর লাগু করলে নেপালের মতো অবস্থা করে দেবেন । তার আগে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জি হুমকি দিয়েছিলেন রাজ্যে এসআইআর লাগু করতে দেবেন না এবং করলে লক্ষাধিক লোক নিয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও করবেন । এদিকে বিজেপি অভিযোগ করছে যে মূলত বাংলাদেশের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাঁচানোর জন্য এসআইআর- এর বিরোধিতা করছে রাজ্যের শাসকদল ।
আজ সোমবার বিকেলে বিজেপি নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার ডাকে দলীয় কর্মী সঞ্জয় ভৌমিকের হত্যার প্রতিবাদে নবদ্বীপের বড়াল ঘাটে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জনবিন্যাস পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী । পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ এরাজ্যের ৯-১০ টি জেলার ডেমোগ্রাফি পরিবর্তন হলো কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । শুভেন্দু অধিকারী জনসভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন,’মোদীজি দমদমের সভা থেকে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন,তারও আগে ১৫ ই আগস্টেরমঞ্চ থেকে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে জম্বু কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি যেগুলো মূলত পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সীমান্ত রাজ্য সেই রাজ্যগুলিতে জনবিন্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে। আপনি নবদ্বীপের লোকেদের জিজ্ঞেস করুন তো এত মুসলমান আগে ছিল ? আজকে কোন জায়গায় গেছে ? আমাদের ভারতীয় মুসলমানদের নিয়ে কোন বক্তব্য নেই৷ যারা বংশপরম্পরায় আছেন তারা থাকুন । কিন্তু বাংলাদেশ থেকে হু হু করে ঢুকছে । ঢুকে এরা জনবিন্যাস বদলে দিচ্ছে ।’
তিনি পশ্চিমবঙ্গের জনবিন্যাস পরিবর্তন নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন । তিনি বলেন,’আগে সবাই জানতো মালদা, মুর্শিদাবাদ আর উত্তর দিনাজপুর জেলা মুসলিম বহুল বা মুসলিম প্রাধান্য । এখন কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং প্রায় হাওড়া জেলা মিলে ৯-১০ টি জেলার ডেমোগ্রাফি পরিবর্তন হলো কেন ? গোটা ভারতবর্ষে ভোটার লিস্টে ৭%, বৃদ্ধি হয়েছে । পশ্চিমবঙ্গে ভোটার লিস্টে বৃদ্ধি ২৮-৩০ শতাংশ কেন ?’ তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘গোটা ভারতবর্ষের জন্মের হারের সঙ্গে ভোটার লিস্টের বৃদ্ধি মাত্র দেড় শতাংশ । পশ্চিমবঙ্গে কেন আড়াই পার্সেন্ট বৃদ্ধি হল ? জন্ম হয়নি কিন্তু ভোটার লিস্টের নাম কি করে উঠছে ? করিমপুর, তেহট্ট, চাপড়া, নাকাশিপাড়া, পলাশীপাড়া, কালিগঞ্জ প্রভৃতি গ্রামগুলি হিন্দু শূন্য হয়ে গেছে ।’ তিনি বলেন,
‘বলতে আমার কষ্ট হচ্ছে । আমি সনাতন পরিবারের সদস্য, অধিকারী পরিবারের । তুলসীতে প্রণাম করে বের হই । স্নান করে গায়ত্রী মন্ত্র জপ করি । আমার বলতে কষ্ট হচ্ছে যে এই বাংলার ৯,০০০ গ্রামে শাঁখ বাজে না। টিপ পরা যায় না ।’ সব শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে নিশানা করে বলেন,’একে তাড়াতে হবে । হিন্দু যদি বাঁচতে চাও মমতার হাত থেকে বাংলাকে মুক্ত কর । এর বাইরে বাঁচার কোন উপায় নেই ।’।

