এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,৩০ জুন : প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অনুদান নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে তুলে আসছে এরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি । তার মাঝেই আবাস যোজনার অনুদান দেওয়ার কাজ চলে আসছে৷ সরকারি অর্থে পাকা ঘরও হচ্ছে । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এমন বহু পরিবার আছে যারা অর্থাভাবে পাকা ঘর করতে পারেনি এবং বিপদজনক মাটির বাড়িতে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে । এমনই এক হতভাগ্য বৃদ্ধা হলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমার পাঁশকুড়া ব্লকের রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পূর্ব শুকুতিয়া গ্রামের বাসিন্দা পুষ্প রানী মাজী (৯২) । রথের দিন সকলে যখন আনন্দ উপভোগ করছে তখন প্রবল বৃষ্টিপাতের সময় মাটির ঘরের দেওয়াল ধসে মৃত্যু হল ওই অসুস্থ বৃদ্ধার । তার পরিচর্যা করতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে প্রাণ হারালেন প্রতিবেশী সুষমা গোস্বামী (৬০ )।
রবিবার ওই দুই পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাঠিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি । সেই সাহায্য রবিবার সন্ধ্যায় মৃতাদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত রায়। পাশাপাশি তিনি দুই পারিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন।
এদিকে দুই বৃদ্ধার মৃত্যুর পর আর্থিক সহায়তা দেওয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্ন । বিশেষ করে বিজেপি প্রশ্ন তুলছে, কেন জরাজীর্ণ মাটির ঘরে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা পুষ্প রানী মাজী ? কেন তাকে জীবিত অবস্থায় সরকারি আবাস যোজনার অনুদান দেওয়া হয়নি ? বিজেপির আরও প্রশ্ন হল,দুর্ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এত সহানুভূতি কি ২০২৬ সালের বিধানসভার ভোটের জন্য ? তৃণমূল টাকা দিয়ে সস্তার রাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেছে বিজেপি ।
মৃতা সুষমা গোস্বামীর ছেলে গনেশ জানান,তার মা দীর্ঘ দিন ধরে পুষ্প রানী মাজীদের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন । শনিবার রথযাত্রা দেখতে যাবেন বলে তিনি কাজে যাননি । এদিকে প্রবল বৃষ্টিপাতের সময় বৃদ্ধা পুষ্প রানীর পুত্রবধূর করগেট পরে গেলে তিনি জখম হয়ে যান৷ যেকারণে বৃদ্ধার পরিচর্যার জন্য একপ্রকার জোর করে তার মাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল । আর বৃদ্ধার পাশাপাশি তার মাও মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন । তিনি আরও জানান, বৃদ্ধার ঘরটি দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল । একদিকের দেওয়ালের একাংশ বৃষ্টিপাতের সময় ধসেও পড়ে । কিন্তু নিরুপায় হয়ে ওই বিপজ্জনক ঘরেই বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছিলেন তিনি । অবশ্য আর্থিক সহায়তা পেয়ে তিনি তৃণমূল সাংসদকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।।