দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৫ অক্টোবর : কয়েকদিন পরেই বাঙালীর সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গোৎসব । পরিবারের সকলের নতুন পোশাক কেনা হয়ে গিয়েছিল । সেই সঙ্গে শৌচাগার নির্মান করার সরকারী অনুদানের নগদ ২২,০০০ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে রাখা হয়েছিল । দূর্গাপূজোর পরেই শৌচাগার নির্মান করার কথা । কিন্তু শনিবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মুহুর্তের মধ্যে সব খুশি বদলে গেল কান্নায় । পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রৌঢ় তমাল হাজরা এখন স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতি নাতনিকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন একটি সরকারি জায়গায় । লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী হারিয়ে এখন ভস্মীভূত বাড়ির সামনে বসে হাহুতাশ করছে পরিবারটি ৷ ওই অসহায় পরিবারটিকে সরকারী সহায়তা দেওয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গেছে,কাটোয়ার পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ক্ষুদ্র কৃষক তমাল হাজরার পাঁচ ছেলে। তার মধ্যে ছোট স্ত্রী ছেলে শ্রীদাম,পুত্রবধূ এবং নাতি নাতনিকে নিয়ে সঙ্গে থাকতেন তমালবাবু । মাটির ছিটেবেড়া দেওয়া দেওয়াল ও খরের ছাউনি দেওয়া একতলা ঘরে কোনো রকমে বসবাস । পরিবার সূত্রে জানা গেছে,শনিবার রাতে গ্যাসে রানার সময় সিলিণ্ডারের পাইপ লিক করে কোনওরকমে আগুন ধরে যায় । সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে খড়ের চালে । এদিকে বাড়ির বিদ্যুতের লাইনের তার পুড়ে গিয়ে শর্টসার্কিট হয়ে গোটা বাড়ি দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে । নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে বাইরে বেড়িয়ে এসে আশপাশের লোকজন ডাকাডাকি করে পরিবারের সদস্যরা । পরে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন । কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখা এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে ঘরের মধ্যে থাকা শ্রীদামবাবুর ছেলেমেয়ের বইপত্র, পুজোর নতুন পোশাক, ঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র,খাটবিছানা নিমেষের মধ্যে ভস্মীভূত হয়ে যায় ।
তমালবাবু বলেন,’অনেক কষ্টে তিল তিল করে একটার পর একটা জিনিসপত্র কিনেছিলাম । সব শেষ হয়ে গেল । জানিনা কিভাবে ফের নতুন করে বাড়ি তৈরি করব ।’ এদিকে অগ্নিকাণ্ডে তমাল হাজরার সর্বসান্ত হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও তৃণমূল নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । একটা হতদরিদ্র পরিবারকে কেন এতদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর দেওয়া হল না ? কেন তাদের মাটির বাড়িতে কষ্ট করে বসবাস করতে হচ্ছিল ? এসব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে ।।