এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ নভেম্বর : পশ্চিমবঙ্গে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি । বিধানসভা বা বিধানসভার বাইরে দু’দলের সাপে নেউলে সম্পর্ক । এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাজ্যবাসীকে কার্যত অবাক করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রীমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আচমকাই তিনি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজের ঘরে ডাকেন । অবশ্য সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেননি শুভেন্দু । তবে সঙ্গে নিয়ে যান বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা,আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং বিধায়ক অশোক লাহিড়ীকে । তাঁদের কয়েক মিনিট সৌজন্যে বিনিময় হয় ।
বেড়িয়ে এসে বিধানসভার গেটের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’ফ্লোরে কো অর্ডিনেশন থাকা দরকার । আমি আশা করব লিডার অফ দ্য হাউসের এই যে সদিচ্ছাটা আজকে দেখিয়েছেন এটা ভবিষ্যতেও শাসক গোষ্ঠী বাহিনী যারা বিধানসভা চালাচ্ছেন তারা অন্তত এটা বজায় রাখবেন ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন,’তিন থেকে চার মিনিট সৌজন্য বিনিময় হয়েছে । এর মধ্যে অন্য কিছু নেই । যখনই রাজ্যের স্বার্থে বিধানসভাতে শাসক বিরোধী সমন্বয়ের জন্য সহযোগীতা চাইবেন, আমরা প্রস্তুত আছি ।’
এদিন বিধানসভায় নিজের বক্তব্য রাখার সকয় শুভেন্দুকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি এক সময় কংগ্রেসে, তারপর তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। অখিল গিরি দলের জন্মের সময় থেকেই রয়েছেন । আপনার বাবা সিনিয়র নেতা। তাকে সম্মান করি।’ এরপর তিনি বলেছেন,’যাকে ভাইয়ের মতো স্নেহ করতাম । তিনি বললেন সরকার অফ দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি হয়ে গেছে।’
এই প্রসঙ্গে শুভেন্দুর উত্তর, ‘২০২১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে লিডার অফ দ্য হাউস যদি লিডার অফ দ্য অপজিশন,শাসক বিরোধী ২৯৪ জন বিধায়ককে সমান দৃষ্টিতে দেখে যাত্রা শুরু করতেন তাহলে তো এই বিষয়গুলো হত না ।’ সেই সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে বলেন,’আপনি বলেছেন তৃণমূলের শুরুর সময় ওরা ছিল না । হ্যাঁ, আমরা ছিলাম না । ১৯৯৮-এ ওখানে তৃণমূল হারতো । আমরা যোগ দিয়েছি ১৯৯৯ -এর ৯ আগস্ট ।তখন তৃণমূল বিজেপির জোট ছিল । আপনার ভোট কোথায় ছিল,সব বিজেপির ছিল । তারপরেই আপনি জয়ের স্বাদ পেয়েছেন । আমাদের ঘাড়ে চেপে আপনি এক নম্বর হয়েছেন । নইলে দ্বিতীয়ই থাকতেন । আপনি অর্ধেক প্রকাশ করবেন,বাকি অর্ধেক গোপন করবেন তা হতে পারে না । স্বচ্ছতা রেখে চলুন । বিরোধী দল আর বিরোধী দলনেতাকে মর্যাদা দিন,আমরা এটাকে উদারতা হিসাবেই গ্রহণ করবো । তবে চুরি, দূর্নীতি, কাটমানি আর সর্বত্র দলবাজির শরিক হতে আমরা পারবো না ।’।