নীহারিকা মুখার্জ্জী,হুগলি,১৯ মার্চ : মা-বাবার একমাত্র সন্তান সে। বাবা দেবব্রত চ্যাটার্জ্জী একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত। মা শিবানী চ্যাটার্জ্জী স্বাস্থ্যদপ্তরে কর্মরতা। এরকম পরিবারের সন্তান হিসাবে নিজের জন্মদিনটা ধুমধাম সহকারে পালন করতে পারত সে এবং সেটাই হতো মানানসই। কিন্তু নিজের জ্ঞান ও বোধশক্তি হওয়ার পর থেকেই আত্মীয় স্বজনদের পরিবর্তে দুস্থদের মাঝে নিজের জন্মদিন পালন করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে হুগলির উত্তরপাড়ার মেয়ে সুশান্তিকা চ্যাটার্জ্জী ওরফে মা-বাবার আদরের তিন্নি। এদের টানে কখনো সে ছুটে গেছে শ্রীরামপুরের অনাথ আশ্রমে, কখনো পুরুলিয়ায় বা অন্যত্র। নিজের হাতে বাচ্চা বা প্রবীণদের মুখে তুলে দিয়েছে খাবার। মাথা নীচু করে বড়দের আশীর্বাদ গ্রহণ করেছে। লক্ষ্য একটাই ওদের সঙ্গে নিজের জন্মদিনের আনন্দটা ভাগ করে নেওয়া এবং বিনিময়ে প্রবীণদের আশীর্বাদ পাওয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটলনা।
বর্তমানে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই)-এ কর্মরতা তিন্নি কর্মসূত্রে দিল্লির বাসিন্দা। মা যেতে না পারলেও সাতসকালে বাবা পৌঁছে যান দিল্লিতে, মেয়ের কাছে। বাবা-মেয়ে দিল্লির একটি মন্দিরে পুজো দিয়ে ওখানকার কিছু অনাথদের হাতে তুলে দেয় খাদ্যসামগ্রী।
মেয়ের জন্য গর্বিত বাবা দেবব্রত বাবু বললেন,ছোট থেকেই লক্ষ্য করে দেখেছি আমার মেয়ের মধ্যে কোনো বিলাসিতা নাই। গরীবদের প্রতি তার অদ্ভুত একটা টান আছে। আমরা চাই আমাদের মেয়ে যেন এরকমই থেকে যায়।
বছর চব্বিশের লাজুক তিন্নির বক্তব্য, দামি পার্থিব উপহার পায়না ঠিকই কিন্তু মহামূল্যবান আশীর্বাদ পায়। উনারা যখন মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেন অথবা অনাথ শিশুদের মুখে ঝরে পড়ে স্বর্গীয় হাসি মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত আনন্দ আমার কাছে হাজির। আজ চাকরি করছি ঠিকই কিন্তু আমি কৃতজ্ঞ আমার মা-বাবার কাছে। বাধা দেওয়ার পরিবর্তে উনারা নিজেদের সাধ্যমতো আমার পাশে আছেন, আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন।।