এইদিন ওয়েবডেস্ক,মিরাট,২৪ জুলাই : উত্তর প্রদেশের মিরাট থেকে এক অদ্ভুত ঘটনা সামনে এসেছে। বিহারের এক মৌলবীর ছেলে মিরাটে গিয়ে রীতিমতো মন্দিরের পুরহিত বনে যায় ও শ্রদ্ধালুদের হাত দেখে ভবিষ্যৎবাণী করতে শুরু করে৷ গুনধর মহম্মদ কাসিম নিজেকে কৃষ্ণ নামে পরিচয় দিয়েছিল । কিন্তু লোকজনের সন্দেহ হলে সে সবকিছু খুলে বলে ।
জানা গেছে,ওই যুবক গত এক বছর ধরে মিরাটের দাদরি গ্রামে বাস করছিল। এই গ্রামে একটি প্রাচীন শিব মন্দির রয়েছে। এক বছর আগে যখন সে মন্দিরে এসেছিল, তখন সে বলেছিল যে তার নাম কৃষ্ণ এবং তার বাবার নাম সন্তোষ। কাসিম বলেছিল যে সে দিল্লি থেকে এসেছে এবং এই কথা বলে সে মন্দিরে থাকার অনুমতি চেয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে , গ্রামে মন্দির দেখাশোনা করার জন্য কেউ না থাকায়, গ্রামবাসীরা তাকে মন্দিরে থাকতে দেয়। কাসিম সেখানে পূজা করতে শুরু করে এবং মন্দিরের দেখাশোনা করতে শুরু করে। গ্রামবাসীরাও তাকে বিশ্বাস করতে শুরু করে। কাসিম সকাল- সন্ধ্যা পূজা এবং যজ্ঞ করত । ভক্তদের প্রসাদও দিত । শুধু তাইই নয়,কাশিম লোকেদের হাস্তরেখা দেখে ভূতভবিষ্যৎ বলার ধান্দাও শুরু করে৷ এই কারণে, লোকেরা তাকে একজন ধর্মীয় গুরু হিসাবে বিবেচনা করতে শুরু করে।
কিন্তু সম্প্রতি, গ্রামবাসীরা তার আচরণ দেখে সন্দেহ পোষণ করে এবং তার কাছে তার আধার কার্ড চায় । প্রথমে কাসিম নানা অজুহাত দেখাতে থাকে, তারপর সে ১৫ দিন ধরে বেপাত্তা হয়ে যায় । কিছুদিন পর, সে আবার মন্দিরে ফিরে আসে। এই সময়ের মধ্যে, গ্রামবাসীরা তাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।গ্রামবাসীরা পুলিশকে এ বিষয়ে অবহিত করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে তার নাম মোহাম্মদ কাসিম এবং সে বিহারের বাসিন্দা। সে আরও জানায় যে তার বাবার নাম আব্বাস এবং সে বিহারের একজন মৌলবি । পুলিশ জানিয়েছে যে কাসিম দান করা জিনিসপত্র এবং অর্থ মন্দিরের জন্য নয় বরং নিজের জন্য ব্যবহার করছিল।
বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে মিরাটের এসপি(নগর) আয়ুশ বিক্রম সিং বলেন, দৌরালা থানা এলাকার একটি মন্দির থেকে তথ্য পাওয়া গেছে যে একজন ব্যক্তি নিজেকে হিন্দু বলে দাবি করে পুরোহিত হিসেবে বসবাস করছে । ঘটনাস্থলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জানা যায়, ওই ব্যক্তি বিহারের বাসিন্দা মহম্মদ কাসিম। সে নিজের নাম পরিবর্তন করে কৃষ্ণ রেখেছিল এবং মন্দিরে থেকে পূজার নামে দানও আদায় করছিল । পুলিশ জানিয়েছে যে মন্দির থেকে দান করা অর্থের অপব্যবহার এবং ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে বিশ্বাসের সাথে খেলা করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত কাসিমের দাবি নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ বিহার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছে । এর পাশাপাশি ঠিকানাটিও তদন্ত করা হচ্ছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র নাকি ব্যক্তিগত লাভের জন্য করা প্রতারণা তাও পুলিশ তদন্ত করছে। এসপি বলেছেন যে যদি এই মামলায় অন্য কোনও ব্যক্তি জড়িত থাকে বা কোনও সংগঠিত প্রচেষ্টা দেখা যায়, তাহলে সেই দিকেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।।

