এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৫ এপ্রিল : মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী গুলি অনৈতিকভাবে শাসন ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই অবর্ণনীয় সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা । যার প্রতিচ্ছবি দেখা গেছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে । যাই হোক, ইসলামি মৌলবাদীদের হামলার মাঝেও আজ মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখের দিন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শতাব্দী প্রাচীন বট বৃক্ষের দেবী নিচে সিদ্ধেশ্বরী পূজোয় মেতে উঠলেন হিন্দুরা । দেশসহ পরিবারের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং মঙ্গল কামনায় হিন্দু নারীরা দল বেঁধে পূজাঅর্চনা করেন । এই পূজাকে কেন্দ্র করে তিন দিনব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়ভাবে এই মেলা বউমেলা নামে পরিচিত। আর এ আনন্দ আয়োজন শুধু একটি সম্প্রদায়কেই নয়, যুক্ত করেছে আশেপাশের সব সম্প্রদায়ের মানুষকে।
সোনারগাঁ উপজেলার জয়রামপুর গ্রামে শতাব্দী প্রাচীন একটি বটগাছকে সিদ্ধেশ্বরী দেবী রূপে এই পূজার প্রচলন ঘটে প্রায় একশ বছর আগে। পরে বংশ পরম্পরায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই পূজা। তবে শুরুর দিকে শুধু বাড়ির নববধূদের নিয়ে এই আয়োজন হলেও পরে তাতে বিভিন্ন বয়সের নারীরা অংশ নেন। শতবর্ষী ওই বট গাছটিকে স্থানীয় সনাতন ধর্মের মানুষ সিদ্ধেশ্বরী দেবী বলে মানেন । এই গাছটি সিদ্ধেশ্বরী কালীতলা নামে পরিচিত। কিন্তু এলাকায় এটাকে বলা হয় বউতলা। পুরুষরাও এই মেলায় যান, তবে সংখ্যায় কম।
প্রতি বছরের বৈশাখ মাসের প্রথম দিন দেবী সিদ্ধেশ্বরীর পূজো হয় । এবারও সিদ্ধেশ্বরী কালীতলায় সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ পূজার আয়োজন করেছে। নারীরা মৌসুমী ফল নিয়ে লাইন ধরে বটগাছের নিচে রেখে পূজা করছেন। পূজা শেষে তা প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হচ্ছে। মেলায় আসা দর্শনার্থীরা জানান, প্রতি বছর এখানে পরিবারের মঙ্গল কামনায় পূজা-অর্চনা করে আসছেন। এটি বেশ পুরোনো রীতি, পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই পূজায় অংশ নেন তারা। মূল পূজা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে হলেও ভোর থেকেই এখানে হিন্দু পরিবারের বধূরা স্নান করে শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মাকে তেল-পান দিয়ে পরিবারের সকলের জন্য মঙ্গল কামনা করে।
একজন পূণ্যার্থী জানান, তারা ছোট বেলা থেকে এখানে পূজা দিয়ে আসছেন। সিদ্ধেশ্বরী কালী দেবী হিসেবে এ গাছে পূজা দেন তারা। প্রথা অনুযায়ী এ গাছের গোড়ায় বিভিন্ন বয়সী নারী মাটি দিয়ে থাকেন। মাটির সঙ্গে একটি করে কড়ি দিতে হয়। এতে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। তাছাড়া পরিবারের সদস্য যত জন, ততবার মাটি দিতে হয়। পূজার আয়োজক নিলুৎপল রায় বলেন, শুরুর দিকে এখানে পুরুষরা আসতো না, এই পূজা শুধুমাত্র নারীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। জামাইদের নিমন্ত্রণ করা হতো। তারা মেলায় আসতেন, তবে তারা পূজায় অংশ নিতেন না। তাই তখন থেকেই এই মেলা বউ মেলা নামে পরিচিতি পায়। নববর্ষের প্রথম দিনে দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় এই পূজার আয়োজন করা হয় ।
নতুন বছর যেন ভালো কাটে, সবাই যেন ভালো থাকতে পারে শান্তিতে থাকতে পারে তাই এই পূজার আয়োজন করা হয়। প্রায় একশ বছর ধরে এই পূজার আয়োজন হচ্ছে। বউ মেলাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় বৈশাখী উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।।

