এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৫ নভেম্বর : ২০২৬ সালে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন । হিন্দু ভোট টানতে দুই উগ্র ইসলামপন্থী দল বিএনপি বা জামায়াত ইসলামি মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের তরুণ অধিকারকামী নেতা ঝুমন দাস ঘোষণা করেছেন যেচিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুকে জেল থেকে মুক্তি না দিলে বিএনপি-জামায়াতকে ভোট না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের হিন্দুদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন । আজ নিজের একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। ঝুমন দাস স্পষ্টভাবে লিখেছেন, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত হিন্দু সমাজ যেন এই দুই দলকে সম্পূর্ণভাবে বর্জন করে।
তিনি লিখেছেন,’চিন্ময় প্রভুর অন্যায় কারাবাস হিন্দু সমাজের প্রতি অপমান। বিএনপি-জামায়াত-শিবির হিন্দুদের ভোটের অধিকার রাখে না। এরা নেচে নেচে নির্বাচন করবে, আর আমাদের অধিকার চাওয়া মানুষটাকে জেলে ভরে রাখছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, জামায়াত চাইলে চিন্ময় প্রভুর জামিন দিতে পারত, কিন্তু তারা তা করছে না। “তাহলে আমরা কেন ভোট দেব?”—এই প্রশ্ন তোলেন ঝুমন দাস। তিনি হিন্দু ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যদি কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকে, তাকে ভোট দিন। আর কেউ না থাকলে ব্যালটে ‘ভোট ফর চিন্ময়’ লিখে দিন। এটাই হবে আমাদের প্রতিবাদ, আমাদের ঐক্যের প্রকাশ।”
পোস্টে ঝুমন দাস কড়া হুঁশিয়ারি দেন সেই হিন্দু পাতিনেতাদের, যারা বিএনপি বা জামায়াতের হয়ে ভোট চাইতে হিন্দু সমাজে যাবেন। তিনি বলেন, “যারা বিএনপির হয়ে হিন্দুদের কাছে ভোট চাইতে আসবে, তাদের এমন শিক্ষা দিতে হবে যেন ভবিষ্যতে কেউ হিন্দু সমাজকে ব্যবহার করার সাহস না পায়।” তিনি আরও লেখেন, “যারা নিজেদের স্বার্থে আমাদের অধিকার বিক্রি করে দেয়, তাদের সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করা উচিত—যাতে তারা বুঝতে পারে হিন্দু সমাজ আর নীরব থাকবে না।”
ঝুমন দাস মনে করেন, হিন্দু ভোটাররা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নেয়, তাহলে তাদের রাজনৈতিক প্রভাব অস্বীকার করার উপায় থাকবে না। তিনি বলেন,“আমরা দুই কোটি হিন্দু, আমাদের ভোটেই অন্তত চল্লিশজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। যদি আমরা একসাথে দাঁড়াই, আমাদের শক্তি কেউ অগ্রাহ্য করতে পারবে না ।” তিনি আরও লেখেন, “তারা নিজেরা মারামারি করুক, সেটা আমাদের বিষয় না। আমাদের একটাই দাবি—আমাদের মানুষ চিন্ময়ের মুক্তি।” পাশাপাশি তিনি হিন্দু সমাজকে “নো ভোট” আন্দোলনের দিকেও উৎসাহিত করেন। তার মতে, যদি ব্যালট বাক্সে শুধু “চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চাই” লেখা একটি কাগজও ফেলা হয়, সেটিও হবে প্রতিরোধের শক্তিশালী বার্তা।
চিন্ময় প্রভু দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় সোচ্চার ছিলেন। তাকে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করে কারাগারে ঢুকিয়ে রেখেছে মহম্মদ ইউনূস সরকার । এদিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কুখ্যাত ইসলামি সন্ত্রাসীদের একের পর এক জেল থেকে মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে । ফলে হিন্দুদের সম্পর্কে জামাত ইসলামি, বিএনপি ও ইউনূসের নীতি নিয়ে গভীর সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে । দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই হিন্দু সমাজ তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। ঝুমন দাসের এই ফেসবুক পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, “এটাই হিন্দুদের ঐক্যের সময় ।” কেউ কেউ লিখেছেন, “চিন্ময় প্রভুর মুক্তি না হলে হিন্দু ভোটে তালা পড়ে থাকবে।”

