এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১১ জানুয়ারী : বাংলাদেশের দ্বাদশ নির্বাচন পর্ব মিটতেই হিন্দুদের উপর সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিমদের হামলা শুরু হয়ে গেছে । গত ৯ জানুয়ারী সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা বরুণ ঘোষ নামে ৪২ বছরের এক হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে । বরুণ ঘোষ বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মী ছিলেন । অন্যদিকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার অন্তর্গত মধ্যম নলুয়া-২ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণ পাড়ার মন্দিরে কীর্তন করার সময় হিন্দুদের উপর হামলা চালিয়েছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মুসলিমরা । আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
জানা গেছে,বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা বরুণ ঘোষ আওয়ামী লীগের স্থানীয় কর্মী ছিলেন । এবারের নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তেহজীব আলম সিদ্দিকী সামীকে হারের মুখে পড়তে হয়েছে। তাকে পরাজিত করেছেন নির্দল প্রার্থী নাসির শাহরিয়ার জাহেদী । বরুনের দাদা অরুণ কুমার ঘোষ বিরোধী ওয়ার্কার্স পার্টির স্থানীয় নেতা । ফলে রাজনৈতিক কারনেই বরুণ ঘোষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ।
যদিও আওয়ামী লীগের প্রার্থী তেহজীব আলম সিদ্দিকী সামি বলেন, বরুণ তার দলের একজন দায়িত্বশীল কর্মী। রাজনৈতিক কারণে তাকে টার্গেট করা হয়েছে ।
বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে,বরুণ ঘোষকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তার পা কেটে ফেলে দুষ্কৃতীরা । প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি । সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনউদ্দিন জানান, আওয়ামী লীগ কর্মীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করেছে। তিনি জানিয়েছে, খুনের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার জের ধরে বরুণকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে,বাংলাদেশের নির্বাচনের আগের দিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত মধ্যম নলুয়া-২ নম্বর ওয়ার্ড ব্রাহ্মণ পাড়া এলাকায় মহিলা সদস্যার বাড়ির পাশে লোকনাথ আশ্রমে সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ এলাকার হিন্দু মহিলা ও পুরুষরা জড়ো হয়ে সন্ধ্যা কীর্তন করছিলেন । সেই সময় পার্শ্ববর্তী খাগরিয়া থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক খাগরিয়া গ্রামের মোহাম্মদ কাশেম ও তার চার ছেলে মোহম্মদ সোহেল, মোহম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ সাইফুল এবং মোহম্মদ শাহাদাত সেখানে চড়াও হয় । হিন্দুরা ঈগলকে(নির্দল প্রার্থীর প্রতীক) কেন ভোট দিয়েছে একথা বলে তারা হামলা চালিয়ে দেয় । মন্দির ভাঙচুর করে এবং মহিলাদের শ্লীলতাহানি ও মারধর করে বলে অভিযোগ । ঘটনার পর পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায় এই ঘটনায় স্থানীয় সাতকানিয়া থানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ । তবে ওই দুই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ ৷।