এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৭ মে : কট্টরপন্থী মানসিকতায় পাকিস্তানকে টেক্কা দিচ্ছে আর এক ইসলামি রাষ্ট্র বাংলাদেশ ৷ চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানে এক খ্রিস্টান যুবককে কোরান পোড়ানোর অভিযোগে ইঁট ছুড়ে খুন করা হয় । তার ঠিক দু’দিনের মাথায় বাংলাদেশের বশেমুরবিপ্রবির এক হিন্দু ছাত্রকে নির্মমভাবে মারধর করেছে ওই কলেজের কট্টরপন্থী মুসলিম ছাত্রদের দল। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ছাত্র উৎস গায়েন নামে ওই হিন্দু পড়ুয়া বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তার অবস্থা আশঙ্কাজনক । মাথায় গুরুতর আঘাতের কারনে আজ সোমবারও জ্ঞান ফেরেনি ওই হতভাগ্য পড়ুয়ার । এতেও ক্ষান্ত হয়নি একই কলেজের মৌলবাদী ছাত্ররা । তারা প্রহৃত উৎস গাইনের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবিও জানায় ।
উৎস গাইন শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের পড়ুয়া । ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,রবিবার (২৬ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জারের একটি গ্রুপে ইসলামের নবী মোহাম্মদকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন । কিন্তু সম্ভাব্য পরিণতির কথা অনুমান করে পরক্ষণেই সেই মন্তব্য মুছে দিয়েছিলেন । কিন্তু তার আগেই গ্রুপের মুসলিম সদস্যরা ওই হিন্দু পড়ুয়ার মন্তব্যের স্ক্রীন শট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে জলঘোলা করে দেয় ।
জানা গেছে,রবিবার (২৬ মে) ধর্মোন্মাদ মুসলিম ছাত্রের দল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউমার্কেটের একটি দোকানে উৎস গাইনকে নিয়ে গিয়ে জোর করে মৌখিক স্বীকারোক্তি আদায় করে । সেখানে উৎস গায়েনকে ধরে নির্মমভাবে মারধর করা হয় । মারতে মারতে তাকে প্রক্টরের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয় । রাতে প্রক্টর দপ্তর থেলে উৎস গাইনের কাছ থেকে লিখিত স্বীকারোক্তি আদায় করে নেওয়া হয় । লিখিত স্বীকারোক্তি দিতেই ওই হতভাগ্য হিন্দু পড়ুয়াকে ফের অমানবিক ভাবে মারধর করা হয় । এই পাশবিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন উৎস গাইন । পরে খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে । সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সম্ভব না হলে তাকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করে দেয় ।
এরপর পুলিশ প্রহরায় খুলনা থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় উৎস গাইনকে। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে অনেক দেরি হয়ে যায় । ওই হতভাগ্য পড়ুয়ার বাঁচার আশা ক্ষীণ বলে জানা গেছে । এখন প্রশ্ন উঠছে হামলারী কট্টরপন্থী মুসলিম ছাত্রদের বিরুদ্ধে কেন খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রজু করা হবে না ?