এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুরুগ্রাম,১৮ নভেম্বর : হরিয়ানার নুহতে হিন্দুদের ধর্মীয় মিছিলে ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে । বৃহস্পতিবার রাতে নুহ শহরের পান্ডু রাম চক এলাকায় একটি পরিবারের দ্বারা আয়োজিত একটি ধর্মীয় মিছিল লক্ষ্য করে ব্যাপক ইঁটপাটকেল ছোড়ার অভিযোগ উঠল মুসলিম কিশোরদের বিরুদ্ধে । পাথরের আঘাতে তিন মহিলা আহত হওয়ার পরে গুরুগ্রামের নুহ জেলায় নতুন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা শুক্রবার বাজারগুলি বন্ধ রেখেছিল । হামলাকারী মুসলিম কিশোরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার হিন্দুরা ।
পুলিশ জানিয়েছে যে মিছিলটি ছিল ‘কুয়ান পুজান’ অনুষ্ঠানের অংশ ছিল । স্থানীয় বাসিন্দা রাম অবতার এবং তার পরিবার দ্বারা আয়োজন করা হয়েছিল । বৃহস্পতিবার রাতে রাম অবতারের পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে কাছাকাছি একটা শিব মন্দিরে যাচ্ছিলেন । রাত্রি প্রায় ৮ টা নাগাদ মিছিলটি একটি মসজিদের কাছাকাছি এলে সেই সময় প্রায় ২০ জন মুসলিম কিশোরের দল আচমকা মিছিল লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে । ওই হিন্দু পরিবারের লোকজন আতঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের
খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে । পুলিশ জানিয়েছে, আহত তিন মহিলাকে চিকিৎসার জন্য নুহের কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দ্রুতই ওই এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় । ঘটনাস্থলে ছুটে যান নুহের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট নরেন্দ্র বিজার্নিয়া । এরপর থেকে এলাকা থেকে কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি ।
এদিকে অপরাধী কিশোরদের বাঁচানোর জন্য আসরে নেমে পড়েছে মাদ্রাসার আলেম । সে মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্র এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও পাথর ছোড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ।
নুহ পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) কৃষাণ কুমার বলেছেন,’মাদ্রাসার কর্মীরা বলেছিল যে কিশোররা খেলছিল এবং একে অপরের দিকে চপ্পল ছুড়ছিল, তখন চপ্পল এসে মিছিলের উপর পড়েছিল। কিন্তু, মিছিলে যারা পাথর ছোড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে, যার ভিত্তিতে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখছি । আক্রান্ত পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮(দাঙ্গা, মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত), ১৪৯(বেআইনি সমাবেশ), ৩২৩ (স্বেচ্ছায় আঘাত করা),৩৪১ প্রভৃতি ছাড়াও এসসি/এসটির ধারার অধীনে অজ্ঞাত সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন । তবে শুক্রবার পর্যন্ত কোনো গ্রেফতারির খবর নেই । কুমার বলেন,ঘটনার পর হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের স্থানীয় সদস্যদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
চলতি বছরের ৩১ জুলাই এভাবেই দাঙ্গা লাগিয়েছিল নুহের মুসলিমরা । ‘ব্রিজমণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা’ উপলক্ষে বের করা বার্ষিক ধর্মীয় মিছিলে নুহের মুসলিমরা হামলা চালালে দুই হোম গার্ড সহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছিল । কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ৮৮ জন আহত হয় । এমনকি পাহাড়ের আড়াল থেকে মহাদেবের মন্দির লক্ষ্য করে দীর্ঘক্ষণ গুলি চালায় দাঙ্গাকারীরা । বেশ কয়েকজন পূণ্যার্থী অল্প বয়সী হিন্দু মেয়েদের ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ । এই দাঙ্গায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের স্থানীয় মুসলিম বিধায়ক মাম্মন খান ও আম আদমি পার্টির এক মুসলিম নেতার বিরুদ্ধে ।।