এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুড়্গ্রাম,১৫ আগস্ট : গত ৩১ জুলাই হরিয়ানার নুহতে হিন্দুদের জলাভিষেক যাত্রায় মুসলিম জনতার হামলার ঘটনায় ৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে । শতাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জিহাদিদের দল । অল্প বয়সী পূণ্যার্থী তরুনীদের যৌন নিগ্রহের ঘটনাও পর্যন্ত ঘটে বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে দুই শতাধিক দাঙ্গাকারী । এদিকে নুহ হিংসার পর জাতপাত ভুলে একজোট হয়েছে হিন্দুরা । তারা এককাট্টা হয়ে মুসলিম সমাজকে সামাজিকভাবে বহিষ্কারের ডাক দিয়েছে ।
রবিবার (১৩ আগস্ট ২০২৩) হরিয়ানার পালওয়ালের পোন্ডারিতে আয়োজিত হিন্দুদের মহাপঞ্চায়েতেও একই দাবি উঠল । মুসলমানদের অর্থনৈতিক- সামাজিক বয়কট, গোহত্যা বন্ধ,নিরাপত্তার জন্য অস্ত্র লাইসেন্স এবং আগামী ২৮ আগস্ট ফের ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে মহাপঞ্চায়েতে আলোচনা হয় । পাশাপাশি হিন্দু সংগঠনগুলি রাজ্য সরকারের কাছে নূহ থেকে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের উচ্ছেদ এবং কংগ্রেস বিধায়ক মাম্মান খানকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার সহ বেশ কয়েকটি দাবি রাখে ।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে,গত রবিবারে আয়োজিত মহাপঞ্চায়েতে হরিয়ানা গোরক্ষক দলের আচার্য আজাদ শাস্ত্রী বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ‘করো অথবা মরো’ আওয়াজ তোলেন । আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনে হিন্দু যুবকদের অস্ত্র ধরার জন্য তিনি আহ্বান জানান । হরিয়ানার মুসলিম অধ্যুষিত মেওয়াতে দুরপাল্লার রাইফেলের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য তিনি দাবি জানান । পাশাপাশি মেওয়াতে মুসলিম কলোনি গড়ে ওঠার জন্য তিনি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে একহাত নিয়েছেন । আচার্য আজাদ শাস্ত্রী বলেন,’ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়েছিল । অথচ গান্ধীর কারনেই এই মুসলিমরা মেওয়াতে থেকে যায় ।’
মহা পঞ্চায়েতে বক্তৃতা দেওয়ার সময় অ্যাডভোকেট কুলভূষণ ভরদ্বাজ বলেন,’নূহতে হিন্দুদের উপর যে ধরণের সহিংসতা সংঘটিত হয়েছিল তা আগেও ঘটেছে। তাই এখন সময় এসেছে, হিন্দুদের ভয় পাওয়ার দরকার নেই ।’ তিনি মুসলমানদের সম্পূর্ণ সামাজিক ও অর্থনৈতিক বয়কটের দাবি জানান। একই সাথে, তিনি জোর দে যে ব্রিজমণ্ডল শোভাযাত্রা তার নির্ধারিত দিনে ২৮ আগস্ট আবার অনুষ্ঠিত হবে এবং এর জন্য কারও অনুমতির প্রয়োজন নেই। তিনি ধর্ম ও হিন্দুদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেন।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বনসাল, হিংসায় নিহতদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা এবং সরকারি চাকরি, আহতদের ৫০ লাখ টাকা এবং পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরির দাবিকে সমর্থন করেন । যেসমস্ত হিন্দুদের দোকান, বাড়ি এবং যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের একশ শতাংশ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলেন তিনি । তিনি পালওয়াল এবং গুরুগ্রামে নোয়াকে একীভূত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন,’বিগত গত কয়েক দশক ধরে নূহ জেলাকে জিহাদি সন্ত্রাস ও অপরাধীদের আশ্রয়স্থল বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে ।’
প্রসঙ্গত,দেশ ভাগের পর মেওয়াতের মুসলিমরা পাকিস্তানে চলে যেতে চেয়েছিল । প্রথম থেকেই তারা পাকিস্তানের সমর্থক ছিল । এদিকে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলও চেয়েছিলেন মেওয়াতের মুসলিমরা পাকিস্তানে চলে যাক । এমনকি তিনি মেওয়াতের মুসলিমদের গাড়ি করে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা পর্যন্ত করে ফেলেন । কিন্তু ব্যাগড়া দেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী । তিনি সদলবলে মেওয়াতে গিয়ে মুসলিমদের ভারতে থাকার জন্য রাজি করে ফেলেন । ফলে সর্দার প্যাটেলের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় । গত মাসে মেওয়াতে ভগবান মহাদেবের জলাভিষেক যাত্রায় মেওয়াতের মুসলিমদের হামলার পর এখন অনেকেই মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে দুষছেন ।।