এইদিন ওয়েবডেস্ক,বগুড়া,২৭ অক্টোবর : মহানবমীর রাতে বাংলাদেশের আধা-সামরিক বাহিনী ‘আনসার’ -এর কর্মী বগুড়া-শিবগঞ্জ পৌরসভার বানাইল এলাকার নিজের বাড়িতে রহস্যজনকভাবে খুন হন আশাদেবী মোহন্ত (৩২) নামে এক হিন্দু গৃহবধূ । নিজের শোবার ঘরের খাটের মধ্যে ওই বধূর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজন । অবশেষে সেই খুনের কিনারা করল পুলিশ । বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শিবগঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আনসার দলনেত্রী আশাদেবীকে খুনের ঘটনায় তার প্রেমিক নয়ন ইসলামকে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে । ধৃত যুবক শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া এলাকার রমজান আলীর ছেলে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
পুলিশ সুপার বলেন,আশাদেবী বাড়ির পাশেই একটা দুর্গাপূজা মণ্ডপের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন । নবমীর রাত্রি ১১ টা নাগাদ তিনি পোশাক পরিবর্তনের কথা বলে বাড়ি গিয়েছিলেন । সেই সময় পূজা মণ্ডপে বধূর শাশুড়ি, জা ও ভাই ছিলেন । কিন্তু প্রায় ১১ টা ১৫ নাগাদ তার শাশুড়ি বাড়ি গেলে বাড়ির মূল গেট বন্ধ অবস্থায় দেখতে পায় । তখন তিনি পিছনের দরজায় গিয়ে দেখেন দরজাটি খোলা আছে । এরপর আশা দেবী ঘরে ঢুকতেই দেখতে পান যে তার পূত্রবধু ঘরের খাটের ওপর নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছে ।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন,’রাতে শিবগঞ্জ থানায় খবর গেলে আমরা ঘটনাস্থলে তৎক্ষনাৎ পৌঁছে যাই । তারপর ঘরে ঢুকে দেখা যায় ওই মহিলার গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় আছে এবং মুখে একটা মোবাইল চার্জারের তার জড়ানো রয়েছে ।’ তিনি বলেন,’বিষয়টি যে খুনের ঘটনা তা প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট বোঝা যায় । কিন্তু তখনও খুনির বিষয়ে ধোঁয়াসা ছিল । তারপর আধুনিক প্রযুক্তি, পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদে এটা স্পষ্ট হয় যে খুনি পরিচিত ও মৃতার বাড়িতে তার যাতায়তও ছিল । কারন ওই পাড়ায় একটা কুকুর রয়েছে, আমরা জানতে পারি যে খুনের ঘটনার দিন কুকুরের চিৎকার কেউ শোনেনি । সাধারণত কুকুর কোনো অপরিচিত লোক দেখলে চিৎকার করে,কিন্তু এক্ষেত্রে করেনি ।’
তিনি জানান,শেষে মোবাইল ফোনের সূত্রে মৃতার প্রেমিক নয়ন ইসলাম জানতে পারা যায় । তাকে আটক করে জেরা করতেই সে খুনের কথা কবুল করে । ধৃত যুবক জানায় যে আশাদেবী মোহন্তকে সে ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে । তিনি জানিয়েছেন,এই খুনের ঘটনায় আদালতে দ্রুত চার্জশিট পেশ করা হবে এবং ন্যায় বিচারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে । তবে ঠিক কি কারনে ওই মুসলিম যুবক তার প্রেমিকাকে হত্যা করেছে তা তিনি স্পষ্ট করে কিছু জানাননি ।
যদিও স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা ঘুনাক্ষরেও টের পাননি বলে জানিয়েছেন মৃতার স্বামী পেশায় মুদিখানা সামগ্রীর ব্যবসায়ী ভজন কুমার মোহন্ত ।।