জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,১২ অক্টোবর :
সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলায়, সেটা টি-২০ বা ৫০ ওভার হতে পারে, একটা কথা খুব চালু আছে – উইকেট বাঁচিয়ে রেখে স্লগ ওভারে পিটিয়ে রান তুলতে হবে। ১১ ই ও ১২ ই অক্টোবর পরপর দু’দিন ধরে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে বিদায় নেওয়ার আগে এবারের বর্ষাকাল স্লগ ওভারের মত ব্যাটিং শুরু করেছে।
সরকারি সময়কে অমান্য করে কিছুটা আগে এদেশে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করলেও এবার বর্ষাকালে বৃষ্টির পরিমাণ খুব একটা ভাল হয়নি। কৃষিপ্রধান দেশ হলেও এই দেশ তথা রাজ্যের কৃষিকাজ মূলত বৃষ্টি নির্ভর। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার জন্য ঠিক সময়ে আমন ধান রোপণ করা যায়নি। সরকারি হিসাবে অনেক জমি নাকি ফাঁকা পড়ে আছে। আবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার জন্য জলাশয়গুলো কার্যত ভর্তি হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই এখন প্রয়োজনের সময় সেচের জন্য আমন ধানের জমিতে পুকুর থেকে জল পাওয়াটা সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আসন্ন বোরো বা আলু চাষের সময় জমিতে জলসেচ নিয়েও একটা অজানা আতঙ্ক থেকে গেছে।
ঠিক তখনই বিদায় নেওয়ার মুখে গত দু’দিন ধরে পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে স্লগ ওভারের মত শুরু হয়েছে মারকাটারি বৃষ্টি। সঙ্গে বিদ্যুতের চমক। সন্ধ্যে থেকে শুরু করে একটানা প্রায় এক ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের পর ক্রিকেটের জলপানের বিরতির মত কিছুক্ষণ বিশ্রাম এবং তারপর আবার শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সেই একই ঢঙে – কেবল চার ও ছয়। দেড় ঘণ্টার উপর চালিয়ে ব্যাট করার পর এখন অবশ্য টেস্ট ক্রিকেটে জিওফ্রে বয়কটের ধাঁচে ব্যাটিং চলছে। আপাতত থামার কোনো লক্ষণ নাই । বুধবার সন্ধ্যা থেকে এমনই দৃশ্য দেখা গেল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার ও মঙ্গলকোট ব্লকের একাধিক অঞ্চল জুড়ে ।
কথা হচ্ছিল মঙ্গলকোটের চানক অঞ্চলের বালিডাঙা গ্রামের চাষী তাপস বিশ্বাসের সঙ্গে । তাঁর বক্তব্য,’ধানের জমিতে জলের টান ধরেছিল। অতিরিক্ত খরচ করে নদী থেকে জল তুলে সেচ করছিলাম। এই বৃষ্টির জন্য খুব উপকার হলো। তবে যেসব ধান পেকে গেছে তার কিছুটা ক্ষতি হতে পারে । তাসত্ত্বেও সার্বিকভাবে ভাল হলো ।’।