জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৯ মার্চ : পেশাগত জীবনে দেশবাসীকে রক্ষা করাই ছিল ওদের ব্রত। যাযাবরের মত ছুটে বেরিয়েছেন এক রাজ্য থেকে অন্য এক রাজ্যে। এর মধ্যেই ওরা খুঁজে পেয়েছিলেন মানুষকে সেবা করার মন্ত্র। অবসরের পরও সেই মন্ত্র ওরা ভুলে যাননি। কিভাবে মানুষের সেবা করা যায় সেটাই ছিল ওদের ভাবনা। বেছে নিতে চাইলেন এমন একটা ক্ষেত্র যেখানে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে কাছে পাওয়া যাবে। অবশেষে শনিবার (১৮ মার্চ ২০২৩) পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা পৌরসভার ‘তিলোত্তমা’ লজে ‘বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির’ -এর মধ্যে দিয়ে ওরা সেবার জগতে পদার্পণ করলেন। ওরা হলেন গুসকরা ও আশেপাশের প্রায় চল্লিশ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী । শিবির পরিচালনা করেন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চারজন চিকিৎসক । কার্যত কোনো প্রচার ছাড়াই শিবিরে প্রায় দুই শতাধিক দুস্থ মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। ভিড় দেখে আপ্লুত হয়ে ওঠেন সেনাকর্মীরা। সুযোগ পেলে আগামী দিনেও এই ধরনের আরও একটি শিবিরের আয়োজন করার ইচ্ছে তাদের আছে।
তবে শুধু এই একটা ক্ষেত্রেই আবদ্ধ থাকতে তারা চাননা। দুঃস্থদের বস্ত্রদান, দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য, দুর্যোগে আক্রান্তদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা নিজেদের নিয়োজিত করতে চান। কিন্তু তাঁরা জানান, পারস্পরিক আলোচনার জন্য তাদের একটা নির্দিষ্ট ঘরের দরকার যেটা ওদের এই মুহূর্তে নাই। তাই গুসকরা পৌরসভার কাছে ওদের আবেদন যদি একটা নির্দিষ্ট ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় তাহলে খুব ভাল হয়।
অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের এই মহতী কর্মকাণ্ডে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, প্রত্যেক কাউন্সিলার, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম, চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী সহ শহরের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। একেবারে শেষ লগ্নে উপস্থিত হয়েছিলেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা.শ্যামল দাস। সেনাকর্মীদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন
সুশান্ত কুমার, পরেশনাথ ঠাকুর, বি টি সাধু,
এম.এ হাসনাথ, রঞ্জিৎ কুমার সিং, চিন্ময় ব্যানার্জ্জী, সুব্রত সরকার, বংশীধর পাল, প্রদীপ ঘোষ প্রমুখ।সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য পুর কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করে প্রদীপবাবু বললেন,কর্ম জীবনে আমরা ছিলাম যাযাবর। সেটা ছিল একটা জগত। কিন্তু সেবা কাজের জন্য আমাদের একটা ঘরের দরকার। সেটার অভাবে আমাদের আজও যাযাবরের মতই বিচরণ করতে হচ্ছে। যেটুকু আলোচনা হচ্ছে সবই ফোন মারফত। যদি আমাদের ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় তাহলে খুব ভাল হয়। আশাকরি চেয়ারম্যান আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
বিধায়ক বললেন,সেনাকর্মীদের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারলাম না। নিজের অসুস্থ শরীর নিয়ে চলে এলাম। আমি অবশ্যই চেয়ারম্যানকে ওদের আবেদন বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করব।
কুশল বাবু বললেন,সেনাবাহিনীর জওয়ানরা আমাদের গর্ব। তাইতো তাদের এই মহতী উদ্যোগে পুরসভার পক্ষ থেকে সমস্ত রকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি এবং আগামী দিনেও দেব। ওদের ঘরের বিষয়টি আমরা মাথায় রাখবো ।।