এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৩ নভেম্বর : প্রশাসনের বারংবার আশ্বাসের পরেও বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কারের কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি । বিগত প্রায় চারমাস ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে মালদার মানিকচক ব্লকের ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুরের কাটা বাঁধ এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছিল । শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে অস্থায়ী ফুটব্রীজ তৈরির উদ্যোগ নিলেন ভূতনীর একদল যুবক । গ্রামবাসীদের মধ্যে চাঁদা সংগ্রহ করে সেই অর্থে তারা প্লাস্টিকের খালি ড্রাম, লোহার রড ও ‘বাঁশ দিয়ে ফুটব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন । ইতিমধ্যেই অনেকটা কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে ৷ কয়েকদিনের মধ্যেই সাধারণ মানুষ এই ফুটব্রীজ দিয়ে পায়ে হেঁটে, সাইকেল বা মোটর সাইকেল নিয়ে চলাচল করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে । স্থানীয় যুবকদের এই প্রকার জনকল্যাণমূলক উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখর হয়েছেন এলাকাবাসী । পাশাপাশি প্রশাসনের উপর তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।
জানা গেছে,মাত্র কয়েক মাস আগে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে মালদার মানিকচক ব্লকের ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুরের কাটা বাঁধ এলাকায় বাঁধ সহ চলাচলের রাস্তা তৈরি করেছিল সেচ দপ্তর৷ কিন্তু গত আগস্ট মাসে ফুলহর নদীর জলের তোড়ে সেই বাঁধ সহ রাস্তার ভেঙে ভূতনি থানার অন্তর্গত তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয় । বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় গোটা ভূতনিজুড়ে। মাস দুয়েক পর বন্যার জল নামলেও, যোগাযোগের রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে থাকে। প্রশাসনিক আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করতে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন । কিন্তু আশ্বাসই সার। বন্যার পর চারমাস কেটে গেলেও এখনও ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুরে রাস্তা তৈরি হয়নি।
এদিকে গত ১৩ আগস্ট থেকে দক্ষিণ চন্ডিপুর ও হীরানন্দপুর এর কয়েক হাজার মানুষ নৌকা দিয়ে যাতায়াত করছে এই ভাঙ্গা বাঁধের অংশ দিয়ে। প্রশাসনের দেওয়া দুটি নৌকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে প্রত্যেকদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার মানুষ নৌকা পারাপার করে নিত্যদিনের কাজে যাতায়াত করছেন ।
এদিকে এনিয়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়ে গেছে৷ বিজেপির দক্ষিণ মালদার সাধারণ সম্পাদক গৌড়চন্দ্র মন্ডল ভূতনীর যুবককের এই প্রকার উদ্যোগের প্রশংসা করলেও প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে একহাত নিয়েছেন। অন্যদিকে জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী কথায়,ভূতনীর দক্ষিণ চন্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত। কিন্তু পঞ্চায়েত মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। যার জবাব আগামী দিনে ভূতনীর মানুষ দেবেন।।

