এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,২৫ অক্টোবর : বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন কুন্ডুবাড়ি মেলা স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার এলাকায় ব্যানার টাঙানো হয়েছিল । মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুর বাজারে টাঙানো ওই ব্যানার দেখার পর স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভের পাশাপাশি ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । প্রতিবছর কালিপূজা ও দিপাবলী উপলক্ষ্যে আয়োজন করা দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ এই ঐতিহ্যবাহী মেলা বন্ধ ঘোষণায় অনেকের মন খারাপ হয়ে যায় । কিন্তু কে বা কারা ওই ব্যানার টাঙিয়েছিল তা অজানা ছিল । কিছু অনুসন্ধিৎসু মানুষ ফেসবুক ঘাঁটতে গিয়ে দেখে যে এই ষড়যন্ত্রের হোতা জঙ্গি সংগঠন জামাত ইসলামি । আর মেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক যুব নেতাকে । যার নাম সঈফ মহম্মদ আল-শা (Shaif Mahamud Al-Sha) ।
বাংলাদেশের জেএমসি মিডিয়া নামে একটা ফেসবুক পেজে সঈফ মহম্মদ নামে ওই জিহাদির ছবি ও ফেসবুক পেজের স্ক্রীন শর্ট পোস্ট করে লেখা হয়েছে,’আপনারা ব্যস্ত হয়ে উঠলেন মাদারীপুর কালকিনিতে ৩০০ বছরের কুন্ডু বাড়ির কালী পূজার মেলা শিরকের নামে বন্ধ করা নিয়ে। কিন্তু কেউ খতিয়ে দেখলেন না কার নেতৃত্বে এটা হলো। সাইফ মাহামুদ তার ফেসবুক একাউন্টে গিয়ে দেখি বাপরে বাপ উনি তো আওয়ামী লীগের বিশাল…. ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, মন্ত্রী সবার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে হয়তো বা বিএনপি কিংবা জামাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে এরা। হিন্দুরা সাবধান, এজন্যই বলি এককভাবে কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ডায় পা দেবেন না।’ পোস্ট করা ফেসবুক পেজের স্ক্রীন শর্ট-এ শেখ হাসিনার দলের যুবনেতাকে মেলা বন্ধের জন্য খুশি প্রকাশ করে পোস্টও করতে দেখা গেছে ।
প্রসঙ্গত,কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডু বাড়িতে ১৭৮৩ সালের নভেম্বরে দিপাবলী ও শ্রীশ্রী কালিপূজা উপলক্ষ্যে দীননাথ কুন্ডু ও মহেশ কুন্ডু এই মেলার প্রবর্তন করেন। তাই কুন্ডুদের বংশের নামানুসারে এই মেলা নাম করন করা হয় কুন্ডবাড়ির মেলা। শুধু কুন্ডবাড়ি জুড়ে নয় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গোপালপুর এলাকার দুপাশে বসে শত শত দোকান। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসে। কাঠের বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্রের জন্য এই মেলা বিখ্যাত। মেলায় মাদারীপুর ছাড়াও ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, বরিশাল, খুলনা, বাগেরহাট, মাগুরা, যশোর, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা তাদের মাটির, বাঁশের ও কাঠের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী ট্রাকযোগে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। শুধু হিন্দু নয়, মুসলিম ব্যবসায়ীরাও পসরা সাজিয়ে বসে । মেলায় কমপক্ষে ৭-৮ কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি হয় । ফলে মেলা বন্ধ হওয়ার ঘোষণার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও মন খারাপ হয়ে যায় । যদিও এবারে আদপেই মেলা বসবে কিনা এবিষয়ে এখনো স্পষ্ট করেনি বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার ।।