এইদিন ওয়েবডেস্ক,চন্ডীগড়,০৯ আগস্ট : হরিয়ানার তিনটি জেলা জুড়ে ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত সম্মিলিতভাবে “মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের বয়কট করার” সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ মহেন্দ্রগড়, ঝাজ্জার এবং রেওয়ারি সহ ওই ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গত ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর ‘ব্রিজমণ্ডল যাত্রা’র সময় সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল । হিংসার সময় খুন,ধর্ষণের পাশাপাশি সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল । সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরে “মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেদের বাড়ি এবং দোকান ভাড়া না দেওয়ার” সিদ্ধান্ত নিয়েছে পঞ্চায়েতগুলি এবং হরিয়ানার কর্তৃপক্ষকে তারা চিঠি দিয়ে অবহিত করেছে বলে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন জানা গেছে ।
হরিয়ানার নুহ(Nuh) থেকে শুরু হওয়া হিংসা ক্রমে গুরুগ্রাম এবং সোনিপাত সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে । সংঘর্ষে দুই হোম গার্ড এবং একজন ইমাম সহ ছয়জন নিহত হয় । হরিয়ানা পুলিশ এযাবৎ ২১৫ জনেরও বেশি দাঙ্গাকারীকে গ্রেফতার করেছে । পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে ৩১ জুলাই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর ‘ব্রিজমণ্ডল যাত্রা’য় হামলা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল এবং এটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র মোতাবেক ঘটেছে ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী,পঞ্চায়েতগুলির লেখা চিঠিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে বাড়ি, দোকান এবং স্থাপনা ভাড়া না দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। এমনকি গ্রামবাসীরা তাদের গ্রামে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আগে হকারদের সনাক্তকরণের । এক্ষেত্রে হরিয়ানার বাল্মিকী ও গুর্জর সমাজকে একত্রিত হতে দেখা যাচ্ছে ।
গুরুগ্রামের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (MCG) বিদায়ী কাউন্সিলর ব্রহ্ম যাদব জানান যে ঘর ভাড়া দেওয়ার আগে আধার কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র যাচাই করা উচিত । মুসলমানদের দ্বারা পরিচালিত মাংসের দোকান বয়কটের ডাক দিয়েছেন তিনি । পাশাপাশি বাল্মীকি সমাজের মানুষদের জেলায় মাংসের দোকান খোলার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন । তিনি বলেন,’৩১শে জুলাই নূহ শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা মুসলিমরা ছড়িয়েছিল । তাই তাদের এলাকায় কোনো ঘর বা দোকান ভাড়া দেওয়া উচিত নয় ।’
মুসলিম অধ্যুষিত নুহ জেলার নন্দ গ্রামের নালহার মন্দিরের কাছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর দ্বারা আয়োজিত মহাদেবের জলাভিষেক যাত্রার উপর হামলা চালায় মুসলিম জনতা । বাড়ির ছাদ থেকে ব্যাপক পাথর ছোড়া হয় । নালহার মহাদেবের মন্দিরের তিন দিকের পাহাড়ে লুকিয়ে থেকে মন্দির লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় দুষ্কৃতকারীরা । পুলিশকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে তারা । পেট্রোল বোমা ছুড়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বহু গাড়ি । অনেক অল্প বয়সী পূণ্যার্থী তরুনীদের টেনে ফাঁকা মাঠের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় । তাদের মধ্যে এখনো বহু মেয়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে দাবি করা হচ্ছে । সহিংসতায় প্রায় এক ডজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে আটজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ফরিদাবাদ, পালওয়াল এবং গুরুগ্রামে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে ১৪৪ ধারা জারি করতে হয় । বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা ।।