এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১২ আগস্ট : কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ৩১ বর্ষীয় মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া এবং অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে । ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পুলিশ মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগ এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল ও আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । এদিকে এক মেধাবী তরুনী চিকিৎসকের নির্মম ধর্ষণ খুনের পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে আমজনতা । এরই মাঝে আন্দোলনকারী এক মহিলাকে চুল ধরে টেনে হেনস্থায় মুহুর্তের একটা ছবি ভাইরাল হয়েছে । ছবিতে শবুজ-কালো শালোয়ার কামিজ পরা এক তরুনীর চুল টেনে ধরে তার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে কলকাতা পুলিশের এক মহিলাকর্মীকে । ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাজ্য বিজেপির নেত্রী অগ্নিমত্রা পাল এবং বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য ৷
অগ্নিমিত্রা পাল লিখেছেন,’আর জি কর হাসপাতালে যে মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুন করা হল তার বিচারের দাবিতে এক বিক্ষোভকারীর চুল টেনে নেওয়ার কলকাতা পুলিশের এক ভয়াবহ চিত্র। ডাক্তারের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা এটি একটি লজ্জাজনক।দেখুক বাংলার মানুষ মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে বাংলায় ‘আইন-শৃঙ্খলা’র কি অবস্থা!এটাই তৃণমূল শাসনের আসল চেহারা।বাংলা নাকি নিজের মেয়েকেই চায়?আজ যে মহিলা ডাক্তার বিক্ষোভ দেখালো বিচারের দাবিতে সে কি বাংলার মেয়ে নয়?ধিক্কার! আমরা এই স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবো।’ তিনি আরও লিখেছেন,’মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে সিভিক ভলেন্টিয়াররা সরকারি কর্মচারী থেকে সন্ত্রাসের এজেন্টে পরিণত হয়েছে। আনিস খানকে হত্যা, নির্বাচনে কারচুপি, এমনকি আর জি কর হাসপাতালে যে মেয়েটি ধর্ষণ ও খুন হল,তাতেও জড়িত সিভিক ভলেন্টিয়াররা। এটাই আজ বাংলার ভয়াবহ বাস্তবতা।এমন পশ্চিমবঙ্গ এমন একটি রাজ্য এখানে আইনের রক্ষকই ভক্ষক।ধিক্কার।নির্যাতিতার পরিবার সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাত দিনের মধ্যে দোষীকে আইনের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একজন অযোগ্য রাজনীতিকের ফাঁপা বক্তব্য ছাড়া এটা আর কিছুই নয়। কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার বছরের পর বছর ধরে ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে, তবুও অভিষেক এবং তার দল শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া ছাড়া কিছুই করেনি। তার নিজের সরকার যখন এতটা ব্যর্থ হয়েছে, তখন তার দ্রুত বিচারের কথা বলার সাহস হয় কী করে? এবং দোষীদের শাস্তির বিষয়ে তার অবস্থান যদি এতই স্পষ্ট হয়, তাহলে কেন তার দল বিধানসভায় “ন্যায় সংহিতা”-এর নিন্দা করল? এর থেকে প্রমাণিত হয় তার রাজনৈতিক যোগ্যতার অভাব !’অন্যদিকে অমিত মালব্যর প্রতিক্রিয়া, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন আরজি কর এমসিএইচ-এর একজন আবাসিক চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে সর্বোতভাবে চেষ্টা করছে। কলকাতা পুলিশ দৃশ্যত এই অপরাধের জন্য একজন ‘নাগরিক স্বেচ্ছাসেবক’কে গ্রেপ্তার করেছে, যখন মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, মৃতের শরীরে ১১টি গুরুতর জখম ছিল, এমনকি তার চোখ থেকে রক্ত ঝরছিল। মনে হচ্ছে, এমনকি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও অভিমত দিয়েছেন যে খুনের আগে তাকে দীর্ঘক্ষণ ধরে ধর্ষণ করা হয়েছিল। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনাস্থল থেকে দুটি বীর্যের নমুনা উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু পরে পুলিশ পিছু হটে। গোলমাল স্পষ্ট।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো এই ধরনের অপরাধে ‘এনকাউন্টার কিলিং’ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এটি শুধু বিপজ্জনক নয় বরং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাকৃত খুনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, যা টিএমসির মতো অশুভ সরকারগুলি প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করতে ব্যবহার করতে পারে। এর নিন্দা করা উচিত।’সব শেষে তিনি লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী। তাকে অবশ্যই সিবিআই-এর কাছে তদন্ত হস্তান্তর করতে হবে এবং প্রতিবাদী চিকিৎসকদের চুপ করআতে পুলিশকে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে ।’।