এইদিন ওয়েবডেস্ক,নোয়াখালী(বাংলাদেশ),১৯ ডিসেম্বর : ধর্মীয় রীতির নামে বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মগুরুরা চূড়ান্ত অরাজকতা শুরু করেছে । বাংলাদেশের নোয়াখালীতে ইসলামী রীতি “হালালা”র একটা চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে । পারিবারিক খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি সময় একজন মহিলাকে তার স্বামী তিন তালাক দিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল । পরে মহিলার স্বামীর সম্বিৎ ফিরলে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার মহতামিমের কাছে পরামর্শ নিতে গিয়েছিল মহিলার পরিবারের লোকজন । ইসমত আলি আশিকী নামে ওই ইসলামিক পন্ডিত নিজেই মহিলাকে নিকাহ করার পরামর্শ দেয় ৷ মহিলা রাজি হয়ে গেলে স্থানীয় মসজিদের ইমাম কাফিল উদ্দিনের সহায়তায় মহিলাকে সে ২ ঘন্টার চুক্তিতে নিকাহ করে । এবং নিকাহের পর বিন্দুমাত্র সময় না নষ্ট করে ওই মসজিদের সিড়িতেই মহিলার সঙ্গে সে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় । মসজিদের সমস্ত লাইট অফ করে দিয়ে তাকে এই প্রকার কুকর্ম করতে সহায়তা করে ইমাম কাফিল উদ্দিন । ঘটনাটাকে ঘিরে শোড়গোল পড়ে গেছে বাংলাদেশ জুড়ে ।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে ময়মনসিংহের ধবলপুর উপজেলার কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসমত আলি আশিকী । যৌন মিলনের সহায়তাকারী মসজিদের ইমামের নাম কাফিল উদ্দিন । সে টেপিরবাড়ির পশ্চিমপাড়া গ্রামের আরফান আলী শাহী জামে মসজিদের ইমাম । অন্যদিকে ইসমত আলি আশিকী বিগত প্রায় চার বছর যাবত ট্যাঙরা মধ্যপাড়া জামিয়ে উলুম কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানার মহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছে ।
জানা গেছে, নোয়াখালীর ওই নির্যাতিতা গৃহবধূকে পারিবার ঝামেলার সময় তিন তালাক দিয়ে দেয় তার স্বামী । তারপর আলেমদের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য ওই মহিলাকে গাজীপুরে তার খুড়তুতো ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় । পরামর্শ অনুযায়ী মহিলার খুড়তুতো ভাই তাকে মহতামিম ইসমত আলি আশিকীর কাছে ফতোয়া জানার জন্য নিয়ে যায় । আশিকী জানায় যে পূর্বের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে হলে ওই মহিলাকে ফের বিয়ে দিয়ে দিতে হবে । এরপর ইসমত আলি আশিকী নিজেই নিকাহ করার প্রস্তাব দেয় । তাকে এই কাজে সহযোগিতা করে আরফান আলী শাহী জামে মসজিদের ইমাম কাফিল উদ্দিন ।
প্রতিবেদনে জানা গেছে,ইসলামী ধর্মীয় রীতি মেনে মহিলাকে নিকাহ করে ইসমত আলি । কিন্তু মহিলা তার খুমলব বুঝতে পারেনি । নিকাহের পর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করতে চায়নি ইসমত আলি আশিকী । মসজিদের ভেতরে ঘর না পেয়ে অসম্পূর্ণ সিঁড়িতেই মহিলাকে নিয়ে গিয়ে সে যৌন মিলনে লিপ্ত হয় । বিষয়টি যাতে কারোর নজরে না পড়ে সেজন্য মসজিদের সমস্ত লাইট লিভিয়ে দেয় ইমাম কফিল উদ্দিন । শারীরিক সম্পর্ক হয়ে যাওয়ার পর ওই মহিলাকে সে তালাক দিয়ে দেয় এবং বলে যে তার আগের স্বামীর কাছে ফিরে যেতে আর কোন সমস্যা নেই ।
বলা হয়েছে,নিজেকে বড় ইসলামিক বক্তা দাবি করা ইসমত আলি আশিকী বলেছে,’একজন মহিলা ও তার বাড়ির লোক আমার কাছে ফতোয়া জানতে এসেছিল । আমি তাকে হালাল করে দিয়েছি ।’ কিন্তু কার সঙ্গে হালাল করা হয়েছিল তার উত্তর সে দিতে চায়নি । একবার বলে ‘পরে জানাবো’, পরক্ষণে সে বলে,’একজন ফকিরের সঙ্গে তার নিকাহ করে দিয়েছিলাম । এখন আমি তার নাম ঠিকানা বলতে পারব না।’ চারদিক থেকে চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত সে ষড়যন্ত্রের গল্প ফাঁদে ৷ যদিও গত শনিবার(১৫ ডিসেম্বর) বিকালে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী কফিল উদ্দিন৷ এদিকে মসজিদের ভেতরে এহেন কুর্তির কথা জানাজানি হলে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় । মসজিদের ইমাম কফিল উদ্দিনকে বরখাস্ত করে মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিরা ।
জানা গেছে,পরে নির্যাতিতার স্বামী স্থানীয় আলেমদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তারা জানায় যে চুক্তিভিত্তিক নিকাহ শরিয়া সম্মত নয়, এটা প্রতারণার সামিল । মসজিদের সভাপতি আলফাউদ্দিন শামীমের বক্তব্য,’মসজিদ হলো পবিত্র স্থান । এটা শুধুমাত্র প্রার্থনার জায়গা । মসজিদের ভিতরে সহবাসের বিষয়টি জানাজানি হলে ইমাম কফিল উদ্দিনকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে ।’ অন্যদিকে মাদ্রাসা সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেছেন,বিষয়টি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটিতে আলোচনা হবে । এবং সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।।