জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৫ জুলাই : এলাকা পরিচ্ছন্ন থাকলে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে যেমন বাঁচা যায় তেমনি অনেক রোগের হাত থেকেও বাঁচা যায়। যত্রতত্র আবর্জনা ছড়িয়ে থাকলে যেমন দৃশ্য দূষণ ঘটে তেমনি সেগুলি হাওয়ায় উড়ে গিয়ে গৃহস্হের বাড়িতে পড়ে এবং অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। তাইতো Cleanliness is next to God আপ্তবাক্যটিকে মাথায় রেখে শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে রাস্তায় নেমে পড়লেন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম সহ অন্যান্য কাউন্সিলররা। লক্ষ্য শুধু শহরকে পরিচ্ছন্ন করা নয় শহরবাসী এবং শহরে আগত মানুষদের মনে গেঁথে দেওয়া ‘একথা যেন সব্বাই মানে, জঞ্জাল নয় যেখানে সেখানে’।
শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সকাল হতে না হতেই সাফাই কর্মীরা বেরিয়ে পড়ছে ঝাঁটা হাতে। দু’বেলা তারা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ঝাঁট দিচ্ছে। শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
গত কয়েক মাস ধরেই গৃহস্থালির পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য পদার্থ পৃথকভাবে রাখার জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে প্রতিটি বাড়িতে নীল ও সবুজ বালতি দেওয়া হয়। সেগুলি সংগ্রহ করার জন্য বাঁশি বাজিয়ে গাড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছে পুরসভার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীরা।
কিন্তু তারপরও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আবর্জনা দেখা যাচ্ছিল। বাস্তবে আউশগ্রাম তো বটেই গুসকরা হলো মঙ্গলকোট, ভাতার সহ বেশ কয়েকটি এলাকার প্রাণকেন্দ্র। স্বাভাবিক ভাবেই শহরের উপর চাপ পড়ে বেশি। তাই শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে বেশ কষ্ট করতে হয়। নিয়মিত সাফাই কাজ হলেও এবার নিজেরাই সাফাই করতে নেমে পড়ল গুসকরা পুরসভার কাউন্সিলরা। বেছে নেওয়া হয় গুসকরা রটন্তী কালী তলা।
গুসকরার অন্যতম পবিত্র জায়গা হলো রটন্তী কালী তলা। নিয়মিত পুজো দিতে আসা ছাড়াও সাধারণ মানুষ এখানে প্রতিদিন বেড়াতে আসেন। মচ্ছব তো লেগেই থাকে। ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকার জন্য মন্দিরের পূর্বদিকে শহরের জঞ্জালগুলো ফেলা হয়। সেখান থেকে পলিথিন উড়ে এসে পড়ে মন্দির চত্বরে। সবমিলিয়ে পবিত্র জায়গা হয়ে ওঠে অপবিত্র। তাই চেয়ারম্যান প্রসঙ্গটা তোলার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত কাউন্সিলররা প্রস্তাবে সায় দিয়ে এলাকাটি পরিষ্কার করতে নেমে পড়ে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ ই জুলাই বিকেল ৪.৩০ নাগাদ প্রতিটি কাউন্সিলর সেখানে হাজির হন। বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষকেও দ্যাখা যায়। আসে পুরসভার ভ্যান। অনেকটা বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা ‘ক্লাসে’র মত প্রবল উৎসাহে শুরু হয় পরিচ্ছন্নতার কাজ। কাউন্সিলরদের আরও অনেকেই পরিচ্ছন্নতার কাজে হাত লাগায়। দৈনিক রটন্তী কালী তলায় বেড়াতে আসা প্রবীণ মানুষজন পুরসভার এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
কুশল বাবু বললেন,’সাফাই কর্মী থাকা সত্ত্বেও নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে আমাদের এই কাজ করার প্রধান কারণ হলো, আমাদের বিশ্বাস, এতে হয়তো সাধারণ মানুষ অন্তত যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার বিষয়ে কিছুটা সতর্ক হবে। দিনের শেষে লাভবান হবে পরিবেশ যার মালিক সবাই।’।