জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা,২৬ জুলাই : বেশ কিছু রোগের ক্ষেত্রে Prevention is better than cure. এবার সেই পথটাই বেছে নিল গুসকরা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ । মশার ডিম পাড়ার আদর্শ জায়গা হলো নোংরা ড্রেনের জমা জল, ডোবা ইত্যাদি। আদর্শ সময় হলো বর্ষাকালের শুরুর সময়। ডিম ফুটে লার্ভা বের হয় এবং তার থেকেই জন্ম লাভ করে হাজার হাজার মশা। এই মশার আক্রমণে প্রতিটি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মত মারণ রোগও বহন করে আনে। মাঝে মাঝে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে দিনের বেলাতেও মশারি টাঙাতে মানুষ বাধ্য হয়। গুসকরায় যাতে সেই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেই জন্য আগে থেকেই সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিল করল গুসকরা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ ।
অ্যাকুরিয়ামে রাখা যে গাপ্পি মাছ বাড়ির শোভা বৃদ্ধি করে তার অন্যতম প্রিয় খাদ্য হলো মশার লার্ভা। রাজ্যের মৎস দপ্তরের উদ্যোগে এই গাপ্পি মাছ উৎপন্ন করা হয়। তারপর সেগুলি বিভিন্ন পুর ও পঞ্চায়েত এলাকায় সরবরাহ করা হয়। মৎস দপ্তরের কাছ থেকে এই গাপ্পি মাছ পেয়ে মঙ্গলবার(২৬ জুলাই ২০২২) গুসকরা পুরসভার ছ’টি পুকুর ও বেশ কয়েকটি ড্রেনে লক্ষাধিক গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়। প্রসঙ্গত,সংশ্লিষ্ট পুকুর ও ড্রেনগুলি মশার আদর্শ ‘ব্রিডিং প্লেস’ হিসাবে পরিচিত।গাপ্পি মাছ ছাড়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম সহ প্রতিটি কাউন্সিলার, পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক অশোক কাঁড়ার, স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক চন্দন যশ সহ বেশ কয়েকজন কর্মী। প্রত্যেকেই নিজ হাতে পুকুরে গাপ্পি মাছ ছেড়ে দেয়।
মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে,’গাপ্পি মাছ কম অক্সিজেনযুক্ত দূষিত জলে বেঁচে থাকতে পারে । ওই মাছের গড় আয়ু ২ বছর। মশার লার্ভা এদের প্রিয় খাবার। প্রতি ঘণ্টায় একটি মাছ দুই শতাধিক মশার লার্ভা খেয়ে ফেলতে পারে। যার জন্য মশক নিধনে গাপ্পি মাছ খুব কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া গাপ্পি মাছ উৎপাদন করাও খুব সহজ ও।
পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক চন্দন যশ বললেন – মশার অত্যাচারের হাত থেকে শহরবাসীকে বাঁচানোর জন্য শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিয়মিত স্প্রে করা হলেও দূষণের হাত থেকে বাঁচার জন্য বিকল্প হিসাবে গাপ্পি মাছ ছাড়ার প্রস্তাব দিলে চেয়ারম্যান সঙ্গে সঙ্গে রাজী হয়ে যান এবং প্রয়োজনীয়তা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। মৎস্য দপ্তর থেকে আমরা গাপ্পি মাছ সংগ্রহ করি। তারপর সেগুলি পুকুরের ছাড়ার ব্যবস্থা করি।
কুশল বাবু বললেন, ‘মশা এবং মশক বাহিত ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার হাত থেকে শহরবাসীকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তর সদাসতর্ক আছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করে থাকে। অতিরিক্ত ব্যবস্হা হিসাবে গাপ্পি মাছ ছাড়ার প্রস্তাব দিলে আমরা রাজী হয়ে যাই এবং প্রতিটি কাউন্সিলার গাপ্পি মাছ ছাড়ার কাজে অংশগ্রহণ করি ।’।