এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৮ জুলাই : মঞ্চে একজন তরুনী মাইক্রোফোন হাতে গান গাইছেন । তাকে ঘিরে রয়েছেন আরও কিছু তরুন-তরুনী । মঞ্চের সামনে শিশু-কিশোর- কিশোরীসহ বিভিন্ন বয়সের অনেক মহিলা-পুরুষ বাদ্যযন্ত্র ছাড়া তরুনীর সেই বেসুরো গান মন দিয়ে শুনছেন । কেউ কেউ মোবাইল ক্যামেরায় রেকর্ড করছেন । কেউ কেউ গানে উৎফুল্ল হয়ে সিটিও বাজাচ্ছে । আপাতভাবে এটা একটা নিছক বিনোদনের অনুষ্ঠান মনে হলেও তরুনীর গানের মধ্যে যে আদিরসাত্মক ভাষা ব্যবহার হয়েছে তা ঘিরে তোলপাড় পড়ে গেছে এলাকায় । কারন তরুনীকে ছড়ার স্টাইলে গাইতে শোনা যায় : “এই, নাতি বলে ঠাকুমা তোমার বুকের ওপর কি ? তোর দাদু লুডো খেলবে গুটি সাজাইছি” । এরপর তরুনীর গানের পরের কথা হল : “এই, নাতি বলে ঠাকুমা তোমার নাভির নিচে কি ? তোর দাদু সাঁতার কাটবে পুকুর বানাইছি” । এই সঙ্গীত অনুষ্ঠানের ঘটনাটি রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার কটোয়ার ভাগীরথীর কালীগঞ্জ ঘাটে স্থানীয় এলাকার কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের গেট টুগেদার অনুষ্ঠানের বলে জানা গেছে ।
শুনুন তরুনীর গান 👇
এদিকে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিরুদ্ধে যথেচ্ছভাবে অশ্লীলতা ছড়ানোর অভিযোগ তুলে কাটোয়া থানার দ্বারস্থ হয়েছে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কাটোয়া থানার আইসি তীর্থেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘থানায় একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্ত চলছে।’ অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি ।
জানা গেছে,কাটোয়ার কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের উদ্যোগে রবিবার ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কাটোয়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদ, ভাতার, বলগোনা প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দা বেশকিছু কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন। মোট ২৯০ জন ওই ফেসবুক মিটআপ অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিলেন। মহিলা পুরুষ ছাড়াও তাদের মধ্যে কয়েকজন বৃহন্নলাও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ছিলেন বলে জানা গেছে । অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘ফেসবুক মিটআপ’ ।
অভিযোগকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক কর্মকর্তা সৌম্য রুদ্র বন্দোপাধ্যায়ের কথায়,’ওই অনুষ্ঠানে শিশু কিশোরদের সামনেই অশালীন কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করা হয়। অশ্লীলতার চরম পর্যায়ে চলে যায়। এটা সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়ঙ্কর একটা লক্ষণ।’ তিনি মনে করছেন যে এতে শিশু কিশোরদের মনে বিরুপ প্রভাব ফেলবে । ভবিষ্যতে যাতে এই প্রকার অনুষ্ঠানের আয়োজন না করতে দেওয়া হয় তার জন্য তিনি পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন । যদিও পুলিশ জানিয়েছেন যে থানাতে অনুষ্ঠানের জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি ।
এদিকে ওই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন কাটোয়ার একাংশের বাসিন্দারা । তাদের অভিযোগ, কন্টেন্ট তৈরির নামে অনেক নিরীহ মানুষদের হেনস্তা এমনকি নিগ্রহ পর্যন্ত করা হয় । কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ‘দৌরাত্মে’ থেকে বাদ যায়না নিরীহ পথচারী থেকে শুরু করে রিক্সাওয়ালা ও হকারও। বিশেষ করে প্রবীণ ব্যক্তিদের কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা নিশানা করে বলে অভিযোগ ।।