জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৫ জানুয়ারী : এতদিন গুসকরা বিদ্যুৎ দপ্তরের সহকারী বাস্তুকার সন্তোষ দাস ও উমা দেবী তাদের একমাত্র সন্তান স্বস্তিকের জন্মদিন চারদেওয়ালের মাঝে আত্মীয়-স্বজন ও কয়েকজন বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে অর্থাৎ ঘনিষ্ঠ মহলের সঙ্গে পালন করে গেছেন। এবার সেই আনন্দটা চার দেওয়ালের বাইরে বেরিয়ে খোলামেলা পরিবেশে আর পাঁচজনের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার ইচ্ছে হয়। বীরভূমের সিউড়িবাসী সন্তোষ বাবুর পক্ষে গুসকরার অপরিচিত পরিবেশে সেটা যথেষ্ট অসুবিধাজনক। মনের ইচ্ছে প্রকাশ করেন নিজের এক সহকর্মীর কাছে। সঙ্গে সঙ্গে সহকর্মী যোগাযোগ করিয়ে দেয় গুসকরা শিরীষতলার বয়েজ ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
গত কয়েক মাস ধরে সংশ্লিষ্ট ক্লাবটি সহৃদয় মানুষদের এবং কখনো কখনো ক্লাব সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায় ‘মানব বন্ধন’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকার বেশ কিছু দুঃস্থ মানুষদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে আসছে। সন্তোষ বাবুর প্রস্তাব ওদের কাছে আসতেই ওরা সানন্দে রাজী হয়ে যায়। মূলত সন্তোষ বাবুর সহযোগিতায় গত ১৪ ই জানুয়ারি প্রায় আশি জন দুস্থ মানুষের মুখে তুলে দেওয়া হয় ভাত, ডাল, মাংস, মিষ্টি ইত্যাদি। খাদ্য বিতরণের সময় সস্ত্রীক সন্তোষ বাবু ও তাদের শিশুপুত্র স্বস্তিকও উপস্থিত ছিল।খাবার খেয়ে তৃপ্ত মানুষগুলো প্রাণভরা আশীর্বাদ করে যায় স্বস্তিককে।
শুধু তাই নয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক সহৃদয় ব্যক্তির সহযোগিতায় ও ক্লাবের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র ও চাদর ঐসব দুস্থ মানুষদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সন্তোষ বাবু বলেন,’আমাদের স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই ইচ্ছে ছিল সবার মাঝে ছেলের জন্মদিন পালন করা। বয়েজ ক্লাবের সহযোগিতায় সেই ইচ্ছে পূরণ হলো। আজ সত্যিই খুব আনন্দ হচ্ছে। স্বামীর সঙ্গে সহমত পোষণ করে উমাদেবী বললেন- সবার মাঝে সন্তানের জন্মদিন পালনে যে এত আনন্দ আছে এখানে না এলে সেটা জানতেই পারতাম না। সন্তানকে মানুষগুলোর প্রাণভরা আশীর্বাদ আনন্দের সঙ্গে বাড়তি পাওনা। সুযোগ পেলে আগামী দিনেও সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার ব্যাপারে তারা ইচ্ছে প্রকাশ করেন। তাদের ইচ্ছে পূরণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য দাস দম্পতি বয়েজ ক্লাবের কর্তকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।
ক্লাবের পক্ষ থেকে দাস দম্পতিকে স্বাগত জানিয়ে ক্লাব সভাপতি সওগত মল্লিক আগামী দিনেও তাদের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন ।।