প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৩ মার্চ : থানা ভবন তৈরির জন্য জুটছে না জমি। অথচ সরকারি জায়গায়, রাস্তার জায়গায় তৈরি হয়ে গিয়েছে বাড়ি । এ নিয়ে রবিবার পূর্ব বর্ধমানের কালনার নান্দইয়ে নিজের দলের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে চুড়ান্ত ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।একই সঙ্গে তিনি কার্যত হুঁশিয়ারির শুরে এদিন জানিয়ে দেন,’যে বা যাঁরা সরকারী জায়গায় বাড়ি করার অনুমতি দিয়েছে,তাঁদের কাউকে তিনি ছাড়বেন না’। মন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি এখন রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালনার নান্দাইয়ে অনুষ্ঠিত তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কর্মসূচিতে সাংসদ শর্মিলা সরকার ছাড়াও দেলের নেতা-কর্মী ও অন্য জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।সভার পুরোধা ছিলেন শাসক দলের পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।দলীয় এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে উঠে,মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,’রাস্তার জায়গায় বাড়ি হয়ে গেল, সরকারি জায়গায় বাড়ি হয়ে গেল? এটা কি করে হয়?আমি বুঝে উঠতে পারছি না, কে বা কারা সরকারি জায়গায় বাড়ি করার অনুমতি দিয়েছিল!কেউ না কেউ তো অনুমতি দিয়েছিল। তাঁদের কিন্তু আমি ছাড়ব না।এটা আমি জানিয়ে রাখলাম।’
এতটা হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী মশাইয়ের বক্তব্য রাখার নেপথ্যে রয়েছে ’থানা’ তৈরির জন্য জমি পেতে ভোগান্তি।মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের বক্তব্যে সেই কথাই উঠে এসেছে। তিনি বলেন,ধাত্রীগ্রামে একটা থানা তৈরি হবে।নতুন থানা তৈরির জন্য পুলিশ প্রশাসন ধাত্রীগ্রামকে বেছে নিয়েছে। ধাত্রীগ্রামে প্রচুর জায়গা থাকতেও কেন থানা করা যাবে না? সরকারী কাজের জন্য জমি পেতে কালঘাম ছোটা নিয়ে খোদ রাজ্যের মন্ত্রী মশাইয়ের এমন আক্ষেপ প্রকাশ,এখন চর্চা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারী জমির ঘাটতি পড়ার জন্য শাসক দলের দিকেই যদিও আঙুল তুলেছেন ধাত্রীগ্রামের বাসিন্দারা। তাদের কথা অনুযায়ী,’ধাত্রীগ্রামের বেলকুলি মাইল পোস্টপাড়া এলাকায় স্থানীয় পঞ্চায়েতের জমি ছিল।এক দশক আগে তৃণমূলের আমলে ওই জমিতে পাকা বাড়ির পাশাপাশি কাঁচা বাড়ি গড়ে উঠে।এখন ওই জমি নিয়েই শাসক নেতাদের নিজেদের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।“ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অশোক চৌধুরী স্থানীয়দের এই দাবির সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে বলেন,“পঞ্চায়েতের জায়গার উপর একটি পাকা বাড়ি ও পাটকাঠি দিয়ে তৈরী একটি বাড়ি রয়েছে।মন্ত্রীমশাই ওই জায়গার কথা এদিন উল্লেখ করেছেন। কয়েকদিনের মধ্যেই পঞ্চায়েত ওই জায়গাটির মাপজোপ করা হবে।’
এ নিয়ে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সুস্পষ্ট কোন জমি নীতি’ই নেই।আর পঞ্চায়েতের জমিতে কেউ নিজের স্পর্ধায় বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই । খোঁজ নিলে দেখা যাবে শাসক দলের নেতাদের কোন না কোন ভাবে “খুশি“ করে তবেই ওই পরিবার গুলি পঞ্চায়েতের জায়গায় বাড়ি তৈরি করতে পেরেছেন ।’ এ নিয়ে মন্ত্রী মশাইয়ের হুঁশিয়ারি ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র মন্তব্য করেছেন।।

